রাজশাহী বিভাগে বেড়েছে হত্যাকাণ্ড-ডাকাতি

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৬ দিন আগে
প্রতীকী ছবি

গত বছরের ৫ আগস্টের পরের ছয় মাসে ৪ হাজার ৩৯৮টি অপরাধ কম সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণ, অপহরণ, চুরি, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের মতো ঘটনা রয়েছে। তবে আগের ছয় মাসের তুলনায় এ সময় হত্যা, ডাকাতি, দস্যুতা ও সিঁধেল চুরি বেড়েছে। রাজশাহী বিভাগের আট জেলার চিত্র এটি।

গত এক বছরে সংঘটিত অপরাধ নিয়ে পুলিশের তৈরি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের ছয় মাসে ১৩ হাজার ২১৬টি অপরাধ হয়েছে। পরের ছয় মাসে অপরাধ হয়েছে ৮ হাজার ৮১৮টি। ৫ আগস্টের আগের ছয় মাসে ১৫০টি হত্যা, সাতটি ডাকাতি, ৫৭টি দস্যুতা, ৯১৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ৩২৩টি ধর্ষণ ও ২৯টি অপহরণ হয়। এ সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ ৩৩টি, সিঁধেল চুরি ৩৯টি, চুরি ৪৭১টি, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার হয় ৬ হাজার ২২২টি।

৫ আগস্টের পরের ছয় মাসে (আগস্ট থেকে জানুয়ারি) ২৪১টি হত্যা, ২০টি ডাকাতি, ৬৪টি দস্যুতা, ৮১৮টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ২৪৯টি ধর্ষণ ও ২০টি অপহরণ হয়। এ সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ ৯টি, সিঁধেল চুরি ৪৭টি, চুরি ৩৮৪টি, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার মামলা হয় ২ হাজার ৭৯৮টি।

বেড়েছে হত্যাকাণ্ড

আগস্টের আগের ছয় মাসে ১৫০ জন খুন হলেও পরের ছয় মাসে খুন হন ২৪১ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭২ জন খুন হন আগস্টে। সেপ্টেম্বরে ৪৬ জন, অক্টোবরে ২৯ জন, নভেম্বরে ৪১ জন, ডিসেম্বরে ৩১ জন ও জানুয়ারিতে খুন হন ২২ জন।

গত ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানায় ১৫ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই দিন সিরাজগঞ্জে ৩০ জন নিহত হন। ৫ আগস্ট ১১ জন নিহত হন। ৪ আগস্ট পাবনায় দু’জন ছাত্র নিহত হন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ আগস্টের পর তিনজন খুন হয়েছেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে কিশোর দলের হাতে খুন হন মাসুদ রানা ও রায়হান আলী।

বেড়েছে ডাকাতি

আগের সাতটির স্থলে পরের ছয় মাসে ২০টি ডাকাতি ঘটেছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীগামী রোড রয়েলস বাসে ডাকাতি হয়। সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অন্তত ৪০ যাত্রীর সর্বস্ব লুট করে নেয়। ৪ ফেব্রুয়ারি মোহনপুর মিরাকেল ওয়াটার পার্কে ডাকাতরা ৩৮ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে। ২৭ জানুয়ারি গোদাগাড়ীর গোগ্রামের প্যারাডাইস রাইস মিলে ডাকাতি হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়ার বিড়ালদহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলীর বাড়ির স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মালপত্র নিয়ে যায় ডাকাতরা। ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কের ওপর গাছ ফেলে অন্তত ৪০টি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বগুড়ায় ৫ আগস্টের পর অন্তত সাতটি ডাকাতি ঘটেছে। সোনাতলায় ৩ ফেব্রুয়ারি রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী খোকনের বাড়িতে ১০/১২ ডাকাত তিন ভরি স্বর্ণালংকার ও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকাসহ প্রায় ২২ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে। ইতালিপ্রবাসী হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে ২৪ ফেব্রুয়ারি অর্ধকোটি টাকার মালপত্র লুট হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে নাটোর শহরের মীরপাড়ায় দুটি হিন্দু বাড়িতে ডাকাতি ঘটেছে। ২৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার নেওয়ারগাছায় ঠিকাদার অনু খানের বাড়িতে ১০-১২ মুখোশধারী ডাকাত ২৫ ভরি সোনার গহনা, ২ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল ফোন নেয়। ২৮ নভেম্বর বাঁখুয়া মহল্লার রফিকুল ইসলাম রতনের গুদামের তালা ভেঙে ডাকাতরা ১৫ লাখ টাকার সরিষা ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়। ৩০ ডিসেম্বর কামারখন্দে গরুবোঝাই ট্রাক ডাকাতের কবলে পড়ে। গত ১২ ডিসেম্বর ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের উল্লাপাড়া এজেন্ট শাখার দুই কর্মীর ২৮ লাখ টাকা লুট হয়। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুটি ও নওগাঁয় তিনটি ডাকাতি ঘটেছে।

রাজশাহী রেঞ্জ উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, অপরাধীরা কৌশল বদলে ডাকাতি, হত্যা, দস্যুতা, সিঁধেল চুরির মতো অপরাধ করছে। ডাকাতদের আবাস মূলত বগুড়া, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জে। আরেকটি আবাস গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত। স্থানীয় জনগণের সঙ্গে পুলিশ দুই শিফটে পাহারা দিচ্ছি। আশা করছি, ডাকাতি নিয়ন্ত্রণ হবে।

সূত্র : সমকাল
  • ডাকাতি
  • রাজশাহী
  • হত্যাকাণ্ড
  • #