এক বছরে দারিদ্র্য বেড়েছে : বিআইডিএস

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে

দেশে বর্তমানে মানুষের অবস্থা ২০২২ সালের তুলনায় খারাপ হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৪ সালে বেড়েছে দারিদ্র্য হার। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পার্সেপশন সার্ভের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত সংস্থাটির কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে সার্ভের প্রতিবেদন সম্পর্কে তুলে ধরেন বিআইডিসের গবেষণা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানান, ২০২২ সালের হিসাবে দেশে গরিব মানুষ ছিল ২৪.৭৩ শতাংশ, সেটি বেড়ে ২০২৪ সালের জরিপে পাওয়া গেছে ২৬.৪৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৬.০৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৬৩ শতাংশ।

সার্ভে প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের হাইজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভের সঙ্গে বিআইডিএসের এই পার্সেপসন সার্ভের তুলনা হবে না।

এ সার্ভেটি ওয়ার্ল্ভ্র ফুড প্রোগ্রামের সহায়তায় এবং বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন ড. ইউনূস। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ভ্র ফুড প্রোগ্রামের বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ সিসেমানি পারসেসমেন্ট।

এ ক্ষেত্রে গ্রামে দরিদ্র মানুষের হার ২০২২ সালে ২২.৫৬ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৪.১০ শতাংশ, একইভাবে অতিদরিদ্র মানুষের হার ৪.৯৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৭৫ শতাংশ। এদিকে শহরে দরিদ্র মানুষের হার ২৮.৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০.৪৩ শতাংশ। এ ছাড়া অতিদারিদ্র্যের হার ৭.৯৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮.১৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় দারিদ্র্য হার ২০২২ সালের ১৮.৬৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে হয়েছে ২৩.৪০ শতাংশ। এ ছাড়া অতিদারিদ্র্যের হার একই, অর্থাৎ ৮.৮০ শতাংশই রয়েছে।

খুলনায় দারিদ্র্য হার ২২.৩৩ শতাংশ থেকে ২৬.৫০ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্যের হার ৩.৮৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭.৫০ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্য হার ২৮.৩৩ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬.৮৩ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্য হার ২৮ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২৬ শতাংশ। এ ছাড়া সিলেটে দারিদ্র্য হার ২৮.৮৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪.৬৭ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্যের হার ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৩৩ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সার্ভেতে অংশ নেওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে ২০২২ সালে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের হার ৩৮.০৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৪৬.৩ শতাংশ।

সভাপতির বক্তব্যে ড. এ কে এনামুল হক বলেন, ২০২২ সালে করা বিবিএসের সার্ভের তথ্যের সঙ্গে এই পার্সেপশন সার্ভের তুলনা না হলেও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বুঝতে বিআইডিএসের এই সার্ভেটি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের নীতিনির্ধারণে এসব তথ্য ভূমিকা রাখতে পারে। তবে দারিদ্র্য হার বেড়ে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া, দেশে বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক কারণ ইত্যাদি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিসেমানি পারসেসমেন্ট বলেন, এটি বিবিএসের সঙ্গে তুলনা না চললেও বর্তমান পরিস্থিতি বোঝাতে বেশ কাজে দেবে। এর ফলে সরকারের যেকোনো নীতিনির্ধারণে কৌশল নেওয়া সহজ হবে। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর বলেন, বিআইডিএসের সার্ভের সঙ্গে বিবিএসের জরিপের কখনো তুলনা করা যাবে না। এটা তুলনা করলে ভুল হবে।

  • দারিদ্র্য
  • বিআইডিএস
  • #