ঈদুল ফিতরের আগে ও পরের ১১ দিন দেশে ২৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৪৯ জনের। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আহত হয়েছেন ৫৫৩ জন। কিন্তু বাস্তবে আহতের সংখ্যা ২ হাজারে বেশি। শুধু রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালেই ঈদের ২ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৭১ জন, যার অধিকাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ৪২.৫৭ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৪.৩৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৩৯ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৫.৬৬ শতাংশ।
যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৩২ জন, অর্থাৎ ১২.৮৫ শতাংশ। একই সময়ে ৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ১৫ আহত হয়েছেন। ১৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১০৬ জন (৪২.৫৭%), বাস যাত্রী ১৪ জন (৫.৬২%), ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৯ জন (৩.৬১%), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ১৮ জন (৭.২২%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৪৯ জন (১৯.৬৭%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-আলগামন) ১০ জন (৪%) এবং বাইসাইকেল আরোহী ৪ জন (১.৬০%) নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৮৭টি (৩৩.৮৫%) জাতীয় মহাসড়কে, ৯৮টি (৩৮.১৩%) আঞ্চলিক সড়কে, ৪৩টি (১৬.৭৩%) গ্রামীণ সড়কে এবং ২৯টি (১১.২৮%) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাসমূহের ৬৮টি (২৬.৪৫%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১১৩টি (৪৩.৯৬%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৪১টি (১৫.৯৫%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ২৪টি (৯.৩৩%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১টি (৪.২৮%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-ড্রাম ট্রাক-ট্যাঙ্ক লরি ১৩%, বাস ১৯.১১%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার ৭.৩৫%, মোটরসাইকেল ২৯.১৬%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ২১.৫৬%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-আলগামন) ৫.১৪%, বাইসাইকেল-রিকশা ২.৬৯% এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১.৯৬%।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪০৮টি। (বাস ৭৮, ট্রাক ২৯, কাভার্ডভ্যান ৪, পিকআপ ৫, ট্রাক্টর ৬, ট্রলি ৫, ড্রাম ট্রাক ৩, ট্যাঙ্ক লরি ১, মাইক্রোবাস ১১, প্রাইভেটকার ১৮, জীপ ১, মোটরসাইকেল ১১৯, থ্রি-হুইলার ৮৮ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ২১ (নসিমন-করিমন-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-আলগামন), বাইসাইকেল-রিকশা ১১ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৮টি।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৩.১১%, সকালে ২৩.৩৪%, দুপুরে ২১%, বিকালে ২৬.৮৪%, সন্ধ্যায় ৮.১৭% এবং রাতে ১৭.৫০%।