যশোরে জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪ বাড়িতে হামলা-লুটপাটের অভিযোগ

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ দিন আগে

যশোর সদরের রূপদিয়া মধ্যপাড়াতে হতদরিদ্র ১৪টি পরিবারের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ দুই ঘণ্টা ধরে জামায়াতের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালান বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালছে বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যশোর সদরের রূপদিয়া মধ্যপাড়ার ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করেছেন বাস্তুহীন ১৪টি পরিবার। জমির মূল মালিক সাঈদ বক্স তাদের আশ্রয় দেন। তার মৃত্যুর পর জামায়াত নেতা খবির খাঁ ও তার অনুসারীরা জমিটি নিজেদের দাবি করে দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। মামলা করেও তারা ব্যর্থ হয়। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে জমি দখল নিতে হুমকি দিতে শুরু করেন তারা। সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল সকালে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ৬০-৭০ জনের একটি সশস্ত্র দল হামলা চালিয়ে ১৪টি বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় বাড়িতে থাকা নারী-পুরুষদের মারধর করা হয়।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, তাদের বাড়িঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি সব লুট করে নিয়ে গেছেন হামলাকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ এলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যে কারণে ফের হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ ঘটনায় রোববার রাতেই ভুক্তভোগী ইজিবাইকচালক মিলন হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। হামলাকারীরা বেশিরভাগই স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী ও সমর্থক বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মিলন হোসেন নামে ইজিবাইকচালক বলেন, হামলা ও ভাঙচুরে এক লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। তার স্ত্রী সালমা খাতুনের ঘর থেকে ৭০ হাজার টাকার স্বর্ণের দুল নিয়ে যায় হামলাকারীরা। রাজিয়ার ঘর থেকে এক লাখ ৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের গহনা, ইসমাইলের ঘর থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা, প্রিয়ার ঘর থেকে স্বর্ণের এক জোড়া কানের দুল, আনসারের ঘর থেকে নগদ ৭০ হাজার টাকা, মিলনের ঘর থেকে ৪০ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে। এছাড়া সিদ্দিকের বাড়ির আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ ভাঙচুর করে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি এবং নগদ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে হামলাকারীরা। হামলাকারীদের মারধরে আনসার, সুফিয়া, রাজিয়া, জানু, পারভীন ও সালমা বেগম আহত হয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত স্থানীয় প্রভাবশালী খবির খাঁ ও তার লোকজন এখনও তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলছেন। না হলে তাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। যে কোনো সময় আবারও হামলার শিকার হতে পারেন বলে আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন তারা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত সোমবার দুপুরে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকনের নেতৃত্বে বিএনপির একটি টিম ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য ও নগদ টাকা সহায়তা দেয়।

যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, হামলার পরে আমরাও কয়েকবার ঘটনা স্থলে গিয়েছি। মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি তদন্ত চলছে।

 

  • অভিযোগ
  • জামায়াত নেতাকর্মী
  • যশোর
  • হামলা-লুটপাট
  • #