আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয় নিয়ে নির্বািসিত লেখক তসলিমা নাসরিন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক মন্তব্য করেছেন। মন্তব্যটি যথাসময়.কম-এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল।
‘ইউনুস সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে। একটা রাজনৈতিক দলকে কি কোনও অনির্বাচিত সরকার এভাবে নিষিদ্ধ করতে পারে? কোনও হ্যাঁ / না ভোট হয়েছে, জনগণ কি সায় দিয়েছে? আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হয়েছে কি না এ ব্যাপারে কোনও নিরপেক্ষ মিডিয়া কি তথ্য পেশ করেছে? বাংলাদেশে আদৌ কি কোনও মিডিয়া নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার সুযোগ পাচ্ছে? জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি পার্টি নিষিদ্ধ হয়েছিল। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটিয়েছিল হিটলার। সাড়ে আট কোটি লোকের মৃত্যু হয়েছিল। আওয়ামী লীগ কি কোনও বিশ্বযুদ্ধ ঘটিয়েছিল? জোড়াতালি দিয়েও এক হাজার লোকের মৃত্যুও শুনেছি সরকার দেখাতে পারে না। এই সরকার তো ক্ষমতা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ের উত্তেজনায় চারদিকে মব লেলিয়ে দিয়েই ওর চেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটিয়েছে।
আমি মনে করি একটি দলই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হওয়ার যোগ্য, সেটি জামায়াতে ইসলামী। কারণ দলটি যুদ্ধাপরাধী আর স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি দ্বারাই গঠিত শুধু নয়, ধর্মের ওপর ভিত্তি করে গঠিত। একটি ধর্মনিরপেক্ষ সভ্য দেশে কোনও রাজনৈতিক দলই ধর্মভিত্তিক হতে পারে না। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশের আদর্শের পরিপন্থী।
আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উঠিয়ে নেওয়া উচিত। যে হারে এই দলের কর্মী এবং সমর্থকদের নির্যাতন করা হচ্ছে, তা ভয়াবহ। ইউনুসের মতো বিবেকবর্জিত, প্রতিহিংসাপরায়ণ, হিংস্র লোক যদি নোবেল পুরস্কার পান, তাও আবার শান্তিতে, তাহলে শান্তির নোবেলের ওপর থেকে মানুষের আস্থা একেবারেই যাবে। এর মধ্যে গেছেও তো অনেকের।’