নেত্রকোনায় দলিত সম্প্রদায়ের ৫টি পরিবারের ওপর হামলা-ভাঙচুর, টাঙানো হয় মাদ্রাসার সাইনবোর্ড

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ২ মাস আগে

নেত্রকোনার পূর্বধলায় খাসজমিতে দীর্ঘদিন ধরে দলিত (মুচি) সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবার বসবাস করা ৫টি পরিবারের ওপর হামলা-ভাঙচুর করে উচ্ছেদ চালিয়েছে একাটি প্রভাবশালী মহল। মহলটি খাসজমিকে নিজেদের জায়গা দাবি করে মাদ্রাসা স্থাপনের সাইনবোর্ড টানায়। ঈদের আগে এবং পরে দফায় দফায় ঘরবাড়ি ভাঙচুরসহ মারধর করে উচ্ছেদ চালায়। ফলে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারগুলো। এ নিয়ে স্থানীয়রা চুপ থাকলেও সেনাবাহিনীর অভিযানের পর পুলিশ পাহাড়ায় রয়েছে ভুক্তভোগীরা। জেলা প্রশাসন থেকে জায়গার মাপঝোক করে নিশানা টানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাবার ও টিন দিয়ে এসেছে।

নেত্রকোনায় দলিত সম্প্রদায়ের ৫টি পরিবারের ওপর হামলা-ভাঙচুর

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের ঝালশুকা বাজারসংলগ্ন রেললাইনের পাশে যুগের পর যুগ ধরে বসবাস করে আসা দলিত (মুচি) সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবার। কিন্তু পার্শ্ববর্তী খলিশাউর ইউনিয়নের ধারা গ্রামের মৃত জানু মিয়ার ছেলে সিরাজ মিয়া, বকুল মিয়া ও তাদের পারিবারিক স্বজনরা জমিটি তাদের বলে দাবি করে বসবাসরত পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা শুরু করে। একপর্যায়ে জমির উপর একটি মাদ্রাসার সাইনবোর্ড টানায়।

মুচি পরিবারগুলো স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গেলে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে ঈদের আগের দিন সুনিল রবিদাসের বাড়িতে হামলা চালিয়ে নারী পুরুষসহ বেশ কজনকে আহত করে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে আসে। এরপর পুনরায় ঈদের পরে পুলিশের কাছে গেলে পরবর্তীতে কয়েক দফায় হামলা চালিয়ে ৫টি ঘর ভেঙে তছনছ করে লন্ডভন্ড করে দেয়। পশুর চামড়া কেনার টাকাও লুট করে নেয়। যে কারণে খোলা আকাশের নিচেই বসবাস করছে নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ কয়েকটি পরিবারের ২২ জন সদস্য। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী যাওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন গিয়ে খাবারসহ টিন দেয় এবং জায়গা চিহ্নিত করে লাল পতাকা দিয়ে খাস জমির মাপঝোক করে দিয়ে আসে। তবে অনেকে বলছেন প্রশাসন আগেই ব্যবস্থা নিলে এই ধরনের অবস্থা হত না।
এদিকে পুর্বধলা থানার ওসি মো. নুরুল আলম জানান, ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে সুনীল রবিদাস। আমরা মামলা নিয়েছি। দলিত সম্প্রদায়ের জেলা সমিতির সভাপতি বাবুল রবিদাস জানান, জেলায় প্রায় আট হাজার এই দলিত পরিবার রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, দলিত পরিবারগুলো খাস জমিতে থাকত। তাদেরকে সরিয়ে দিতে ওই এলাকার কুচক্রীমহল এমন ন্যক্কারজনক কাজ করেছে। সরকারের খাস জায়গায় কে থাকবে কে থাকবে না এটি প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করবে। ওই এলাকার কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যারা এ ধরনের হামলা, ভাঙচুর ও মারধর করেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি। এছাড়া পরিবারগুলোকে ঘর করে দেয়া হবে। নগদ টাকা খারার দিয়ে আসা হয়েছে। তাদের পাশে প্রশাসন আছে। সকল কিছু প্রশাসন দেখভাল করবে। পুলিশ সুপারের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত গ্রেফতার হবে হামলাকারীরা।

  • দলিত সম্প্রদায়
  • নেত্রকোনা
  • হামলা-ভাঙচুর
  • #