কুষ্টিয়ার মিরপুরে ছাত্রদল নেতার হামলায় জমির উদ্দিন (৪৮) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার উপজেলার আমলা ইউনিয়নের মিটন এলাকার ঈদগাহের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের লোকজন প্রতিপক্ষের ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।
নিহত জমির ওই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন। পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অপর দিকে হামলাকারী অনিক খান (২০) উপজেলার আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জেরে আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি অনিক কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ্যে জমির উদ্দিনের ওপর হামলা চালান। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এ সময় জমিরের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হাসান ইমাম গণমাধ্যমকে জানান, নিহত ব্যক্তির মাথায়, বুকে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহতের স্ত্রী জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য জমি বন্ধক রেখে টাকা আনতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। রাস্তায় আটকে অনিক আমার স্বামীকে হত্যা করেছে।তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগে কোনো এক ঘটনায় স্থানীয় চায়ের দোকানে অনিককে থাপ্পড় মেরেছিলেন আমার স্বামী। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই আজ তাকে হত্যা করেছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায় উপজেলা জাসদের সভাপতি আফতাব উদ্দিনের বরাত দিয়ে জানান, গত ৫ আগস্টের আগপর্যন্ত জমির উদ্দিন জাসদের কর্মী ছিলেন। সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় তাকে আর দেখা যায়নি।
মিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সাব্বির আহমেদ মোবাইল ফোনে অনিককে ছাত্রদলের ইউনিয়ন সভাপতি স্বীকার করলেও আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম জানান, অনিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনার পর গ্রাম থেকে বাড়ির সবাই পালিয়ে গেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।