ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, এপিবিএন সদস্যসহ গ্রেফতার ৭

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৩ ঘন্টা আগে
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার সোনাতলায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গৃহস্থের বাড়িতে ডাকাতি করে পালানোর সময় পিকআপে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কনস্টেবলসহ সাত জন ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জনই বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী। সোনাতলা থানা পুলিশ বুধবার (২ জুলাই) রাতে বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকা থেকে তাদের গাড়িসহ গ্রেফতার করেছে।সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন্নবী জানান, মামলার পর বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

বগুড়ার চতুর্থ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক জানান, তদন্ত শেষে অভিযুক্ত কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গ্রেফতার ডাকাতরা হলেন বগুড়ার চতুর্থ এপিবিএনের কনস্টেবল পিকআপচালক সোনাতলা উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের চারালকান্দি গ্রামের মো: সাহাবুলের ছেলে আল হাদী বাবুল (২৮), একই গ্রামের মৃত এনামুল হক মণ্ডলের ছেলে সাদিক আকবর দুখু (২৭), তালকান্দি মধ্যপাড়া গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে শাকিল মিয়া (২৬), দুপচাঁচিয়ার পুকুরগাছা গ্রামের রিপন মিয়ার ছেলে আবদুল্লাহ আল কাফী (১৮), একই উপজেলার ফেপিরা গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে আবিদ হাসান (২৮), গাবতলীর করিমপাড়ার আনসার আলীর ছেলে শাহরিয়ার রহমান স্বাধীন (২৬) এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বেতারা গ্রামের মৃত হারুন-অর রশিদের ছেলে তারেক রহমান (২৫)।

এদের মধ্যে বাবুল এপিবিএন সদস্য ও শাকিল মিয়া ভবঘুরে। অন্য পাঁচ জন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ ও সৈয়দ আহম্মদ কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ এপিবিএনের কনস্টেবল কাম পিকআপচালক আল হাদী বাবুলের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলার চারালকান্দি গ্রামে। পার্শ্ববর্তী কাতলাহার গ্রামের সফিকুল ইসলাম ফটোর সঙ্গে তার পূর্ববিরোধ ছিল। কনস্টেবল বাবুল বুধবার রাতে এপিবিএনের ডাবল কেবিন পিকআপ নিয়ে কাতলাহার গ্রামে যান। ওই গাড়িতে তার সহযোগী দুখু, শাকিল, কাফী, হাসান, স্বাধীন ও তারেক ছিলেন। তারা সফিকুল ইসলাম ফটোর বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ সদস্য পরিচয় দেন। বাড়িতে অবৈধ মালামাল আছে দাবি করে দরজা খুলতে বলে। পুলিশ এসেছে শুনতে পেরে গৃহকর্তা ফটো দরজা খুলে দিলে কনস্টেবল বাবুলের নেতৃত্বে ডাকাতরা বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারা ঘর তছনছ করে আড়াই লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ডাকাতি করে। বিষয়টি পুলিশকে না জানাতে হুমকি দিয়ে চলে যায়।

এদিকে, ডাকাতরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে গেলে গৃহকর্তা ফটো জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন।

সোনাতলা থানার ওসি মিলাদুন্নবী জানান, ডাকাতির খবর পেয়ে ডাকাতদের গ্রেফতার ও এপিবিএনের পিকআপ উদ্ধারে অভিযান শুরু করা হয়। রাত দেড়টার দিকে বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকায় দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে আর্মড পুলিশের পিকআপসহ সাত ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গৃহকর্তা সফিকুল ইসলাম ফটো সোনাতলা থানায় সাত ডাকাতের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

বগুড়ার চতুর্থ এপিবিএনের অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) শহীদ আবু সরোয়ার জানান, ড্রাইভার কনস্টেবল আল হাদী বাবুল কাউকে না জানিয়ে সরকারি গাড়ি নিয়ে নিজ দায়িত্বে বাইরে যান। পরে বগুড়া জেলা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। জেলা পুলিশ সরকারি গাড়িটি এপিবিএনে হস্তান্তর করেছে। কনস্টেবল আল হাদী বাবুলের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার বিকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাতলা থানার এসআই (উপপরিদর্শক) শামীম রেজা জানান, ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার এক কনস্টেবল, পাঁচ কলেজছাত্র ও এক ভবঘুরেকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

  • এপিবিএন সদস্য
  • গ্রেফতার
  • ডাকাতি
  • #