চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন চিকিৎসক ও এক স্বাস্থ্য সহকারীর নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. লিয়াকত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সাময়িকভাবে নিবন্ধন বাতিল হওয়া ব্যক্তিরা হলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ আক্তার হোসেন, ফৌজিয়া ফরিদ, সাওদা তাসনীম এবং স্বাস্থ্য সহকারী জাহেদ হাসান। এদের মধ্যে আক্তার হোসেন ও ফৌজিয়া ফরিদের নিবন্ধন তিন বছরের জন্য, সাওদা তাসনীমের এক বছরের জন্য এবং জাহেদ হাসানের ছয় মাসের জন্য বাতিল করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তারা চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না এবং নিজেদের চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেও পারবেন না।
বিএমডিসি জানিয়েছে, প্রসূতি উম্মে সালমার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা উম্মে সালমা চিকিৎসার জন্য নোয়াখালীর মাইজদীতে অবস্থিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান—সাউথ বাংলা হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক আক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী চিকিৎসক ফৌজিয়া ফরিদ কোনো ধরনের পরীক্ষা বা রোগীর অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই সিজারিয়ান অপারেশন করেন। অপারেশনের পর প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার পর প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন বলে উল্লেখ করে তাকে কুমিল্লায় স্থানান্তর করা হয় এবং পুরো ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়। পরে উম্মে সালমার বাবা, সাংবাদিক এম এ আউয়াল, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেন। তিনি প্রথমে মৌখিক এবং পরে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর আদালতেরও দ্বারস্থ হন।
এম এ আউয়াল বলেন, আমার একমাত্র মেয়েকে না জানিয়ে অপারেশন করে হত্যা করা হয়েছে। বিএমডিসির এই সিদ্ধান্তে অন্তত একটি বার্তা যাবে— অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন, বিষয়টি তিনি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছেন। তবে বিএমডিসির পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাননি।