শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় অসুস্থ স্ত্রীকে জীবিত কবর দেওয়ার চেষ্টা এবং দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোশালপুর মধ্যপাড়ার মৃত জহুর আলীর ছেলে মো. খলিলুর রহমান (৮০) নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রী খোশেদা বেগমকে (৭০) ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে আসেন। এ সময় তার নাতি মো. খোকন (১৯) ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। যা রাতে ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রায় ছয় বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী খোশেদা বেগম। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বামী দীর্ঘদিন ধরে তার সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে উল্টো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। ঘটনার দিন ওই নারী বিছানায় মলত্যাগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী তাকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির উঠানে নিয়ে যান এবং কোদাল দিয়ে গর্ত খুঁড়ে তার গায়ে মাটি চাপা দিতে থাকেন। এ সময় তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতেও দেখা যায়।
এলাকার বাসিন্দা হাফিজ বলেন, খলিলুর রহমান মানুষ হিসেবে মন্দ নন, তবে কারও সঙ্গে খুব বেশি মিশেন না। স্ত্রী বিছানায় পড়ার পর তিনি সেবা করতেন। আজকের ঘটনাটি দুঃখজনক।
পাশের বাড়ির সুজন বলেন, তিনি তেমন ঝামেলায় জড়ান না, তবে গরিব মানুষ। গতকালই স্ত্রীর জন্য একটি চেয়ার কমোড কিনে আনেন। স্ত্রী চোখে ভালো দেখেন না। একটু কথা না শোনায় আজ এই ঘটনা ঘটে। তবে তার নাতি ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদ আনোয়ার বলেন, আমরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক টিম পাঠিয়েছি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা করেছেন। তারপরও লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আহাম্মেদ জাবেদ বলেন, আমি ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি সত্যিই মর্মান্তিক। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।