চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের ছোট দূর্গাপুর গ্রামের প্রবাসী সবুজ (৩৬) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে খুন হয়েছেন। তবে দেশের বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর পৌঁছে দুই দিন পর। এর আগে গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দুবাইয়ের আজমান কেরামা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সবুজ মৃত আমছর আলীর একমাত্র ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর ১০ মাস আগে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে প্রবাস জীবন শুরু করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। সবুজ যে বাসায় থাকতেন, সেখানে ওমানের এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। ওই ব্যক্তির কাছে ভাড়ার টাকা চাইতে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি সবুজের মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করলে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
এমন ঘটনার খবর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন দুবাই প্রবাসী রুবেল নামের এক স্বজন। পরবর্তীতে নিহতের খালাতো ভাই আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বর্তমানে নিহতের মরদেহ দুবাই পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
হত্যাকারী ওমানী নাগরিককে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ আটক করেছে এবং থানায় প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে।
নিহত সবুজের মা পারুল বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, একমাত্র ছেলেকে খুন করে ফেলল। সংসার চালানোর ভরসা ছিল সে। এখন আমি আর আমার নাতিরা কীভাবে বাঁচব?
স্ত্রী রীমা আক্তার আহাজারি করে বলেন, তোমরা আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দাও। ১০ বছরের ছেলে বাইজিদ বাবার জন্য কাঁদছে। শিশুটি এখন বাবাহারা হয়ে গেল।
নিহতের দুই বোনও ভাই হারানোর শোকে ভেঙে পড়েছেন। তাদের সঙ্গে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী দ্রুত মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। সরকারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিহতের মরদেহ দেশে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসকে অবহিত করা হবে।
সবুজের মরদেহ দ্রুত দেশে আনার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে শোকাহত পরিবারের সদস্য এবং এলাকাবাসী।