গত রোববার ও সোমবার মুন্সিগঞ্জের পৃথক স্থান থেকে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মানুষের মাঝে রয়েছে নানা প্রশ্ন ও আতঙ্ক। পুলিশ জানিয়েছে, পৃথক ঘটনাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে।
গত রোববার মুন্সিগঞ্জ শহরের বড় বাজার এলাকা থেকে সেপটিক ট্যাংকের ভিতর থেকে ৩ শ্রমিকের মরদেহ ও শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার পৃথক স্থান থেকে আরও ৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। রোববার শ্রীনগরের পৃথক স্থান থেকে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগের দুইদিনও সদর উপজেলার ফুলতলা থেকে অটোচালক কিশোর ফয়সাল (১৫) ও ডিঙ্গা ভাঙ্গায় এলাকায় এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। দুটি মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম বলেন, শহরের খালইষ্ট এলাকায় সেফটিক ট্যাংক পরিস্কার করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পরে লাশ গুলো ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একই দিন সকালে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আটপাড়া এলাকায় একটি কলাবাগান থেকে আয়নাল হক (৬৫) নামের এক কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেদিন সকালে পূর্ব আটপাড়া গ্রামের নিজস্ব কলাবাগান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত আয়নাল হক ওই এলাকার বাসিন্দা।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান জানান, নিহতের স্ত্রী শাহিদা বেগমের বরাতে জানা গেছে, শনিবার রাত আটটার পর থেকে আয়নাল হক নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাননি। পরদিন সকালে স্থানীয়রা বাড়ির পাশে কলাবাগানে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
নাজমুল হুদা খান বলেন, মরদেহের কয়েকটি স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে গেছে। তবে এটি হত্যাকাণ্ড কিনা, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, রোববার সকাল আটটার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া গ্রামের ঋষিপাড়ায় নিজ বাড়ির ঘরের আড়া থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় আকাশ ঋষি (২২) নামের এক যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তিনি নীল কৃষ্ণ ঋষির ছেলে। পরিবারের ধারণা গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।
একই দিন দুপুরে সিরাজদিখান উপজেলার উত্তর পাঠার পাথরঘাটা এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে আমজাদ হোসেন ঢালী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ ভেসে ওঠে। কেরানীগঞ্জ উপজেলার হযরতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আমজাদ ঢালী স্থানীয় ছাত্রদল নেতা শিমুল আহমেদ সাদ্দামের বড় ভাই।
অপরদিকে, সোমবার শ্রীনগরে পৃথক ঘটনায় তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে বাবার ছুরিকাঘাতে মাদকাসক্ত ছেলের মৃত্যু, রহস্যজনকভাবে মৃত এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার এবং রেললাইনের পাশে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার।
অন্যদিকে, গতকাল সোমবার সকালেই উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ পাইকশা গ্রাম থেকে মামুন কাজী (৭০) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় ঘটনাটি রহস্যজনক বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এছাড়াও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘোলঘর রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, তিনটি মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।