এবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জাকসু নির্বাচনে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ জানালেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
আজ শনিবার ফেসবুক পোস্টে তিনি ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রকাশ্যে ভোট গণনা এবং সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করার দাবি জানিয়েছেন। ভোটার উপস্থিতি অস্বাভাবিক বলেও দাবি করেছেন তিনি। তিনি তাঁর অবস্থানের পক্ষে যুক্তি হিসেবে একজন হল প্রাধ্যক্ষের বরাত দিয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে অধ্যাপক সাত্তার বলেন, সাধারণ চোখে নির্বাচনের দিন ‘কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া’ ভোটদান প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে হতে পারে। তবে এই আপাতত সুষ্ঠুতার পেছনে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা রয়েছে, যা নিয়ে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মূল যুক্তি হলো, নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে শিক্ষার্থীরা বলেছেন যে ভোটার তালিকায় ত্রুটি রয়েছে। এমনকি নির্বাচনের আগের দিনও একজন প্রাধ্যক্ষ তাঁকে জানিয়েছেন যে তাঁর হলে গড়ে ৫০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত নেই।
এ অবস্থায়, যেখানে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল, সেখানে ভোট প্রদানের গড় হার প্রায় ৭০ শতাংশ হয়েছে। এই অস্বাভাবিক উচ্চ ভোটের হার নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন: ‘এই অন্তত ২০ শতাংশ অতিরিক্ত ভোটার কারা?’
তিনি বলেছেন, এই প্রশ্নের উত্তর পেতে নির্বাচনের দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রেকর্ড করা ৮৪টি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। প্রত্যেক ভোটারকে চিহ্নিত না করা পর্যন্ত ভোটার তালিকার ত্রুটি এবং শনাক্তকরণে অস্পষ্টতার অভিযোগ নিষ্পত্তি করা অসম্ভব।
এই কারণেই অধ্যাপক সাত্তার ‘অ্যাবনরমাল’ বা ‘অস্বাভাবিক’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তাঁর মতে, এই অস্বাভাবিকতা প্রমাণ করে যে নির্বাচনের ফলাফলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। এখন এই অস্বাভাবিকতা প্রমাণ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক এবং বিএনপিপন্থী জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। তিনি জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। তাদের অভিযোগ, ভোট গ্রহণ ও গণনায় নানা অনিয়ম হয়েছে, যার কারণে তারা নির্বাচন বর্জন করেছে।
এ ছাড়া নির্বাচনের ফলাফল দেরিতে ঘোষণা হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যালট পেপার আলাদা করা, ম্যানুয়ালি টেস্ট রান করা ও গণনা প্রক্রিয়ায় সময় লাগার কারণে ফলাফল ঘোষণা দেরিতে হয়েছে।