গৌরীপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ দিন আগে

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় এক অধ্যক্ষকে ‘ধাক্কাতে ধাক্কাতে’ কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভূটিয়ারকোণা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ। ভিডিওতে দেখা যায়, ধাক্কাতে ধাক্কাতে গোলাম মোহাম্মদকে একজন প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিচ্ছেন। সেখানে আরও কয়েকজন ছিলেন।

গোলাম মোহাম্মদ বলেন, গত বছরের ৫ অগাস্টের আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে গণিতের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম তালুকদার, ধর্মের শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য শফিকুল ইসলাম রতন ও আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। তারা আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। নইলে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। বহিরাগত নিয়ে কয়েক বার চেষ্টাও করে। পরবর্তী প্রেক্ষাপটে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন মাওহা ইউনিয়ন জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ, স্থানীয় রুমি মিয়া, সাইকুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

তার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে ধাক্কাতে ধাক্কাতে আমাকে কলেজ থেকে বের করে দেন। আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। তাই থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।

কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ অগাস্টের পর নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে গোলাম মোহাম্মদের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের একাংশ। আন্দোলনের এক পর্যায়ে গোলাম মোহাম্মদকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ধর্মের শিক্ষক সাজেদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়।

সাজেদুল ইসলাম গত ১৭ অক্টোবর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পরামর্শে গোলাম মোহাম্মদকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। এরপর থেকে স্থানীয় একটি পক্ষ গোলাম মোহাম্মদকে কলেজে যেতে নিষেধ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাওহা ইউনিয়ন জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালি উল্লাহ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে বিষয়টি সমাধান করে স্যারকে কলেজে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। তিনি নিয়োগ বাণিজ্যসহ ১৩টি অভিযোগে অভিযুক্ত। তাই মানুষ তাকে সহজে মেনে নেবে না, এটাই স্বাভাবিক। যখন স্যারকে ধাক্কা দিয়ে আনোয়ার হোসেন বের করছিলেন, তখন আমি বাধা দিয়েছিলাম। এজন্য দায়ী স্যার নিজেই।

সাজেদুল ইসলাম বলেন, একসঙ্গে স্যারের সঙ্গে ৩০ বছর শিক্ষকতা করছি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি দায়িত্ব নিতে চাইনি। কিন্তু এখানে দুটি পক্ষ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। স্যার তাদেরকে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ। স্যারের সঙ্গে একটি ঘৃণিত কাজ হয়েছে। যারা করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে কথা বলতে আনোয়ার হোসেনকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমানারা বেগম বলেন, ধেরুয়া কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গৌরীপুর থানার ওসি দিদারুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মারধরের বিষয়ে গোলাম মোহাম্মদ অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • অধ্যক্ষ
  • অভিযোগ
  • গৌরীপুর
  • লাঞ্ছিত
  • #