রংপুরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত, ৩ উপজেলায় আক্রান্ত ১১

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৩ ঘন্টা আগে

রংপুরে তিন উপজেলায় ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শুরুতে এই রোগ জেলার পীরগাছা উপজেলায় দেখা দিলেও পরে তা পার্শ্ববর্তী কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর উপজেলায়ও ছড়িয়ে পড়ে। শনাক্ত ১১ রোগীর মধ্যে পীরগাছায় আট, কাউনিয়ায় দুই ও মিঠাপুকুরে একজন রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শনাক্ত হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেকে গরুর যত্ন নেওয়া বন্ধ করেছেন, আবার অনেকে গরুর মাংস খাওয়া বাদ দিয়েছেন। এতে স্থানীয় মাংস ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আইইডিসিআর বিশেষজ্ঞরা অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু আক্রান্ত ১১ জন রোগী শনাক্ত করেছেন। গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর তারা পীরগাছার ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষায় আটজনের অ্যানথ্রাক্স ধরা পড়ে। আর বুধবার কাউনিয়ায় দুজন ও মিঠাপুকুরে একজন শনাক্ত হন।

আইইডিসিআরের এক সূত্র জানায়, ফ্রিজে রাখা গরুর মাংসে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন ছাগলের মাংসের সংস্পর্শে ছিলেন।

রংপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে পীরগাছায় দুজনের মৃত্যু হয়। তাদের শরীরে অ্যানথ্রাক্স জীবাণু থাকলেও মৃত্যু হয়েছে অন্য কারণে। একই সময়ে চার ইউনিয়নে অন্তত ৫০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন।

পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ তানভীর হাসনাত জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন রোগীর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি, গত দুই মাসে অ্যানথ্রাক্সে শতাধিক গবাদিপশু মারা গেছে। অথচ রংপুর মহানগরী ও জেলায় প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার পশু জবাই হলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় না। বিভাগজুড়ে ১ হাজার ৩০৩টি হাট-বাজার থাকলেও কোথাও নেই আধুনিক কসাইখানা বা ভেটেরিনারি সার্জন।

১১ জন শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন রুহুল আমিন বলেন, পীরগাছার পর কাউনিয়া ও মিঠাপুকুরেও রোগীর সন্ধান মিলেছে। নতুন করে আরও আটজনের নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও রিপোর্ট আসেনি। তিনি অসুস্থ গবাদিপশু জবাই ও মাংস খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ জানান, জেলায় ১৩ লাখের বেশি গরু, ছাগল ও ভেড়া আছে। গত ২৬ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬৫ হাজার পশুকে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন করে আক্রান্ত গবাদিপশু পাওয়া যায়নি এবং আতঙ্কের কিছু নেই। মসজিদ, মন্দির ও হাট-বাজারে সচেতনতা কার্যক্রম চলছে।

  • অ্যানথ্রাক্স
  • আক্রান্ত
  • উপজেলা
  • রংপুর
  • শনাক্ত
  • #