বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালনা পরিষদ থেকে চারজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- আজাদ আবুল কালাম, সামিনা লুৎফা নিত্রা, লায়েকা বশীর ও র্যাচেল প্যারিস। বুধবার বিকেলে অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনের কাছে তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ বিষয়ে জানার জন্য মহাপরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়।
আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এই পর্ষদটা একটা অকার্যকর পর্ষদ। নামমাত্র এই পর্ষদ হয়েছে। এদের কোনো ভূমিকা নাই। যদিও পর্ষদের ভূমিকাই প্রধান হওয়ার কথা। আইনগতভাবে ন্যূনতম তিন মাসে একবার এটি বসবে এবং শিল্পকলা কি করবে না করবে, শিল্পকলার পুরো তার কর্মকাণ্ড কি হবে, সেটা পর্ষদ দ্বারা নির্ধারিত হবে। কিন্তু আমরা এই নয় মাসে মাত্র একবার সেটা পেরেছিলাম। তার মানে হচ্ছে পর্ষদের কার্যকারিতা আসলে নাই। যেহেতু কার্যকারিতা নেই- শুধু শুধু নাম দেওয়ার, নাম লিখে রাখার কোনো মানে নেই। কারণ, এর মাঝে কোনো বড় দুর্নীতি হয়েছে কিনা, বড় কিছু হয়েছে কিনা, কিছুই আমরা জানি না। এখন ভবিষ্যতে কখনো যদি প্রশ্ন ওঠে যে অনেক বড় দুর্নীতি হয়েছে, এখন তো সেখানে আমার নাম আছে। তাহলে আমিও দায়বদ্ধ হব। আমরা কেন দায়বদ্ধ হতে যাব? আমি পর্ষদ সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম- একেবারেই সৈয়দ জামিল আহমেদের অনুরোধে আমি বলেছি। উনি চলে যাওয়ার পর থেকে তো পর্ষদের কার্যকারিতা একেবারেই নেই।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমি আইন-১৯৮৯ অনুযায়ী নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠিত হয়। এতে মনোনীত হন আজাদ আবুল কালাম, সামিনা লুৎফা নিত্রা, লায়েকা বশীর, র্যাচেল প্যারিসসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রতিনিধিরা।
পরবর্তীতে পরিষদ গঠনের পর থেকে কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। গত নয় মাসে পরিষদের মাত্র একবার সভা হয়েছে, যা অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ থাকাকালীন সময়ে। তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করার পর থেকে এখন অবধি আর কোনো পরিষদ সভা হয়নি।
আইন অনুযায়ী, প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার পরিষদের সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। এই ব্যত্যয়কেই পরিষদের সদস্যরা গুরুতর আইন লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।
আজাদ আবুল কালাম পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন, নিয়মমাফিক গত ১৮ মার্চের মধ্যে পরিষদের ১২৬তম সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এর আগে শিল্পকলা পরিষদে পদত্যাগের ঘটনা ঘটে। এ বছরের জুলাইয়ে প্রথমে চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান ও পরে পরিষদ সদস্য ও লেখক-গবেষক আলতাফ পারভেজ পদত্যাগ করেন।