মুন্সীগঞ্জ সদরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপির দুটি পক্ষ। এ সময় গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় উভয় গ্রুপ। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ চারজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে সদরের চরকেওয়ার ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ১৪টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধরা হলেন সাকিব মোল্লা (৩০), মহিউদ্দিন মোল্লা (৩৫) ও আকাশ মোল্লা (২৫)। তাদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আহত সাব্বির মোল্লাকে (২২) মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়য়া জানান, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে চরকেওয়ার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জালাল মোল্লা গ্রুপ ও বিএনপি নেতা দেলোয়ার গাজী গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়।
গ্রামবাসী জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হোগলাকান্দি গ্রামের বিএনপি সমর্থিত গাজী গোষ্ঠী ও মোল্লা গোষ্ঠীর বিরোধ বহু পুরনো। সম্প্রতি মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন গাজী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তোলে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় উভয় গ্রুপ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গোলাগুলিতে জড়ায়। এ সময় দুই গ্রুপই অনেকগুলো ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ বিষয়ে চরকেওয়ার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল মোল্লা বলেন, বিএনপি নেতা দেলোয়ার গাজীর গোষ্ঠীর লোকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার প্রতিবাদ করায় শুক্রবার দুপুরে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ করে।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা ও চরকেওয়ার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দেলোয়ার গাজী বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। যারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলেছেন; তারা রাজনৈতিকভাবে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক বলেন, তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম বলেন, ওই গ্রামে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই গ্রুপের লোকজন নিরাপদ স্থানে চলে যায়। পরে তল্লাশি চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় অবিস্ফোরিত ১৪টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। দুই গ্রুপই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো গ্রুপই থানায় অভিযোগ দাখিল করেনি। অভিযোগ পাওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।