পরিবারের অমতে প্রায় দুই বছর আগে বিয়ে করে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন সায়মা আক্তার মীম (২২)। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাইকারটেক সেতু এলাকার ঝোপের ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের চারদিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে ঝোপে ফেলে যাওয়া হয়েছে। তার স্বামী পলাতক।
নিহত সায়মা আক্তার মীম পাবনার সুজানগর থানার দয়ালনগর গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তিনি মোগরাপাড়া আমতলা এলাকার ফিরোজ মিয়ার বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। পাশাপাশি স্থানীয় কলাপাতা বার্গার নামে এক রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। তার স্বামী রায়হান পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন মীম। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোনও সন্ধান না পেয়ে মঙ্গলবার সকালে সোনারগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্বজনরা।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কাইকারটেক সেতুর নিচে ঝোপের মধ্যে স্কচটেপ মোড়ানো একটি বস্তা দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাটি খুলে কালো পলিথিনে মোড়ানো এবং স্কচটেপ প্যাঁচানো ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশটি দেখতে পায়। খবর পেয়ে নিহতের মামা খোকন শেখ সাগর এসে লাশটি শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
খোকন শেখ সাগর বলেন, ‘আমার ভাগনি প্রায় দুই বছর আগে কুমিল্লার রায়হান নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেছিল। উভয় পরিবারের অমতে বিয়ে করে তারা এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল। সম্প্রতি তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। শুনেছি মীমের স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে। ধারণা করছি, পারিবারিক কলহের জেরে মীমকে হত্যা করে লাশ বস্তায় করে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে রায়হান।’
গত শুক্রবার থেকে ভাগনি নিখোঁজ ছিল জানিয়ে শেখ সাগর বলেন, ‘ওই দিনের পর থেকে তার সঙ্গে আর কথা হয়নি আমাদের। তাকে খুঁজেও পাইনি। মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজের বিষয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সন্ধ্যার দিকে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দিয়ে শনাক্ত করেছি।’
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান বলেন, ‘স্কচটেপে মোড়ানো একটি বস্তা থেকে ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে এখানে ফেলে যায়। তার স্বামী পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।’