কুমিল্লার দেবিদ্বারে আবু কাউছার নামে এক পুলিশ সদস্যকে আটকে রেখে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলায় দেবিদ্বার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বিল্লু (৩০) ও তার সহযোগী জালাল উদ্দিনকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে তাদের কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে সেদিন ভোরে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ ও দেবিদ্বার থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ঢাকার আদাবর থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সদস্য আবু কাউছারকে সম্প্রতি তার আপন চাচি আমেনা বেগম (৪৫) জমি কেনার কথা বলে দেবিদ্বার সদরে ডেকে আনেন। ছোট আলমপুর এলাকার একটি জমি দেখানোর পর জমি পছন্দ না হওয়ায় কাউছার চলে যেতে চান। তবে তাকে আলমপুর ক্বারীমিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আব্দুল বারেক ভিলার পঞ্চম তলায় নিয়ে যান আমেনা বেগম।
সেখানে পৌঁছানোর পরই বিল্লালের নেতৃত্বে হেলাল খান ও কামাল হোসেনসহ কয়েকজন মিলে কাউছারকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। কিছুক্ষণ পর তার সাবেক স্ত্রী তাছলিমা আক্তার সেখানে উপস্থিত হন। তারা সবাই মিলে কাউছারের বিভিন্ন ভিডিও ধারণ করে ২০ লাখ টাকা দেনমোহরে আবারও বিয়ে করতে চাপ সৃষ্টি করেন। বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর ও ভিডিও ফাঁসের হুমকি দেন এবং পরে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
ভুক্তভোগী কাউছার বাধ্য হয়ে নগদ ১৩ হাজার টাকা ও প্রায় ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণের আংটি তাদের দেন। পরে তার চাচাতো ভাই খাইরুলের মাধ্যমে বিকাশে আরও ৫০ হাজার টাকা দেয়। এরপরও নির্যাতন চলতে থাকলে কাউছারের স্ত্রী ইশরাত জাহান খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে স্বামীকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার পর ভুক্তভোগী কাউছারের স্ত্রী ইশরাত জাহান বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মোট ৬ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্ত্রী তাছলিমা আক্তার, চাচি আমেনা বেগম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা বিল্লাল হোসেন বিল্লু, বিল্লুর সহযোগী কানা জালাল, কামাল হোসেন ও হেলাল খান।
মামলা দায়েরের পর দেবিদ্বার থানা পুলিশ ও কুমিল্লা ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে ঢাকার আদাবর এলাকা থেকে বিল্লু ও জালালকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনউদ্দিন বলেন, কাউছার নামে এক পুলিশ সদস্যের কাছে চাঁদা দাবির মামলায় দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।