অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্দলীয় রূপে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) বলেছে, একটি নবগঠিত রাজনৈতিক দলসহ ক্ষমতাসীন সরকারে থাকা যে কোনো রাজনৈতিক দলের পরামর্শক, পৃষ্ঠপোষক ও দলীয় পরিচয়ে পরিচিত ব্যক্তিদের পদত্যাগ করতে হবে। এর মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
শনিবার শেষ হওয়া সিপিবির তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়। রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার এই সভায় নির্বাচনে সিপিবি, তার নেতৃত্বাধীন জোটসহ বামপন্থি, গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দল, সংগঠন ও ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সভায় রাজনৈতিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রফিকুজ্জামান লায়েক, এস এ রশীদ, রাগীব আহসান মুন্না, জলি তালুকদার, আমিনুল ফরিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহ আলম, রুহিন হোসেন প্রিন্স, মিহির ঘোষ, শাহীন রহমান, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, পরেশ কর, অধ্যাপক এম এম আকাশ, মৃণাল চৌধুরী, ডা. দিবালোক সিংহ, এমদাদুল হক মিল্লাত প্রমুখ।
সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বহু বিষয়ে সংস্কারের ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে দার্শনিক ভিত্তি সংবিধানের চার মূলনীতিসহ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রশ্নে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে সর্বসম্মত হতে পারেনি, সেসব বিষয়ে গণভোট কিংবা সাংবিধানিক আদেশ জারির এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।
সভায় তিনটি টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে ইজারার বিরোধিতা করে বলা হয়, সাম্রাজ্যবাদী ও আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তির প্রয়োজনে বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে প্রক্সি যুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই পরিচালনা করা হবে।
এ সময় আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবির জাতীয় সমাবেশ সফল করতে দেশবাসীকে আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া ৩১ অক্টোবর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের রাজনৈতিক কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর নারীসমাজের রাজনৈতিক কনভেনশন এবং ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।