প্রস্তাবিত স্বাধীন পুলিশ কমিশনের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিতে সরকার প্রণীত পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। খসড়ার বিভিন্ন ধারা কমিশনকে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি সংস্থায় পরিণত করতে পারে বলে মনে করে সংস্থাটি।
বুধবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাত সদস্যের কমিশনে একজন অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও দুজন পুলিশ সদস্য রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা কমিশনকে সরকারের নির্বাহী বিভাগের অধীন একটি সংস্থায় রূপান্তরিত করার ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে সাবেক ও বর্তমান আমলা-পুলিশ কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্তি বাতিল করে বিচার, আইন, মানবাধিকার ও সুশাসন-সংশ্লিষ্ট নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের নিয়ে কমিশন গঠন করতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, কমিশনের জনবল নিয়োগে সরকারের অনুমোদনের বিধান বাতিল করে নিয়োগের ক্ষমতা কমিশনের হাতে দিতে হবে। প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রেও কমিশনের অনুমোদন অপরিহার্য করতে হবে এবং কোনো সরকারি কর্মচারীকে কমিশনে পাঠানোর বিষয়ে কমিশনের মতামতই চূড়ান্ত হবে।
বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সদস্য নিয়োগের সময় দলনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার রক্ষা, সততা ও শুদ্ধাচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন– এমন ব্যক্তিকেই বেছে নিতে হবে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে সচিব করার প্রস্তাব বাতিল করে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সচিবসহ সব জনবল নিয়োগ করতে হবে। সচিবের পদমর্যাদা ও বেতন সরকারের সচিবের সমান হতে হবে এবং তিনি নন-ভোটিং সদস্য হিসেবে কমিশনে দায়িত্ব পালন করবেন।
সংস্থাটির মতে, কমিশন গঠনের ছয় মাসের মধ্যে ঔপনিবেশিক পুলিশ আইন বাতিল করে খসড়া পুলিশ আইন ২০০৭-এর ইতিবাচক দিক বিবেচনায় নতুন পুলিশ আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের উচিত হবে কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ দেওয়া এবং নিরীক্ষিত ব্যয় বিবরণী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা– এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা।