আজ কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ২ ঘন্টা আগে

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কলম বিসর্জন কর্মসূচির পর রবিবার (৯ নভেম্বর) থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। শনিবার (৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আজ রবিবার থেকে শহীদ মিনারে অবস্থানের পাশাপাশি সারা দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘শাহবাগে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে আহত হয়েছেন শতাধিক। অনেকের হাতে-পায়ে-পেটে রাবার বুলেটের আঘাত পেয়েছেন। মো. আলামিন নামে এক রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে।’

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম গণমাধ্যমকে জানান, আন্দোলনরত শিক্ষকদের শহীদ মিনারে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন, তবে কিছু শিক্ষক ব্যারিকেডের প্রথম লেয়ার ভেঙে ফেলে এবং পরের লেয়ারে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ডিসি মাসুদ বলেন, উনাদের (শিক্ষক) নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা বিষয়টা সমাধান করে ফেলেছিলাম।

শিক্ষকরা জানান, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর, নার্স, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পান। সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন লড়াই করেও ১১তম গ্রেড পাননি। তাই এখন দশম গ্রেড নির্ধারণসহ তিন দফা দাবি আদায়ে মাঠে নামছেন শিক্ষকরা।

প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত হয়ে ১২০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়। শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এতে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আহতদের ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।

আহত শিক্ষকরা হলেন তোফাজ্জল হোসেন, সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, মো. মামুন, মোসাম্মৎ নুসরাত, আজিম উদ্দিন, মো. ফরিদ, হারুন অর রশিদ, মো. রফিক, শরিফুল ইসলাম, মো. সিদ্দিক, মো. আনোয়ার, আব্দুর রশিদ, মো. করিম, সাইফুল ইসলাম রনি, নূরে আলম, নুরুজ্জামান, মনিরুজ্জামান, জিনহাদি হাসান, গাউস আজম, আক্তার হোসাইন, আনোয়ার হোসাইন, আশরাফুল ইসলাম, আরিফ হোসাইন, সুমন মিয়া, মিয়া মনিরুজ্জামান, মো. ওয়াসিম, আবু বক্কর, শাহিনুজ্জামান, মোস্তফা কামাল, মো. ইমতিয়াজ, মো. জাহাঙ্গীর, হেলাল মনিরুজ্জামান, বোরহান উদ্দিন, মো. রাকিব, মো. ইউসুফ, মো. হেলাল, মো. ইকবাল, মো. হাবিব, মোছাম্মৎ ঝুমা, আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক হোসাইন, রাখিব উদ্দিন, মো. ইমতিয়াজ, মো. রমজান, মো. আলিম হোসেন, মো. হান্নান, আক্তার হোসেন, ফারুক হোসাইন, মাহবুব, মো. ইসহাক, টিপু সুলতান, মো. মোরশেদুল, মো. রাকিব, আব্দুল আল মাসুম, মো. সাগর, ইমরান করিম, মাইনুল ইসলাম, আল আমিন, মো. রিপন, মাসুদুর রহমান, রেজাউল ইসলাম, মো. মোশারফ, অমিত, আতিক, জামিল, জহিরুল ইসলাম, আরশাদ উল্লাহ, হারুনুর রশিদ, ফারহানা আক্তার, আরে আর কবির, মো. আনিসুর রহমান, ফরিদুল আলম, সারোয়ার সুলতান, সাহাদেব, লিপি আখতার, বাবুল আহমেদ, আকরাম হোসাইন,নাঈম, এটিএম ইউসুফ আলী, আলী রেজা, শিপ্রা সরকার, রিয়াদুল ইসলাম এবং মোসাম্মৎ তামান্না।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো ফারুক। তিনি জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১২০ জন শিক্ষক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে এসেছেন। অনেকের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা চলছে আবার কিছু শিক্ষক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

প্রসঙ্গত,  শিক্ষকদের তিন দফা দাবি—সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়া, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা

  • কর্মবিরতি
  • প্রাথমিক
  • শিক্ষকরা
  • #