বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলেকে হত্যা, স্ত্রীকেও জখম

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৩ দিন আগে

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ (জেলা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তার স্কুলপড়ুয়া ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৮) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকায় স্পার্কভিউ ভবনে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্ত  লিমনের হামলায় বিচারক আবদুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

জানা গেছে, লিমনের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায়। লিমনের প্রতিবেশী রাজু মিয়া বলেন, সাবেক ইউপি মেম্বার এ এইচ এম সলেমান শহীদের তৃতীয় ছেলে লিমন (৩২)। সলেমান শহীদ ফুলছড়ি উপজেলা বিএনপির সাংগঠিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, তাসমিন নাহারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে অপারেশন করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একজন দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলেকে হত্যা, স্ত্রীকেও জখম

অভিযুক্ত লিমন মিয়া, ছবি : সংগৃহীত

জানা গেছে, বিচারক আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। তিনি পরিবার নিয়ে রাজশাহী মহানগরীর তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকার ওই ভবনে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তাওসিফ রহমান সুমন নগরীর একটি স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়তো বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ভবনটির দারোয়ান মেসের আলী জানান, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মুঠোফোন নম্বর লিখে নেন। বেলা আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাঁকে এসে জানান, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলেকে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তাঁরা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বিচারকের ছেলেকে সম্ভবত শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্ন রয়েছে। তার হাঁটুর নিচে পায়ের আঙুলে কাটা রয়েছে।

তিনি  আরও জানান, লিমন একটি ব্যাগ নিয়ে বাসায় ঢোকেন। ডাইনিং টেবিলে বসে তিনি অনেকক্ষণ ধরে তাসমিন নাহারের সঙ্গে গল্প করছিলেন। একপর্যায়ে লিমন উত্তেজিত হয়ে তার ব্যাগ থেকে ছুরি বের করলে তাসমিন নাহার দৌড় দিয়ে একটি কক্ষে ঢুকে সিটকিনি লাগিয়ে দেন। লিমন ১০-১৫টি লাথি দিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাসমিন নাহারের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। বিচারকের ছেলে পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। সে শব্দ শুনে উঠে এলে বাসার কাজের মেয়ে তাকে বিষয়টি বলেন। ছেলে ওই ঘরে গিয়ে ওই অবস্থা দেখে লিমনকে আটকানোর চেষ্টা করে। তারপরে তাকে ওড়না জাতীয় কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর মধ্যে কাজের মেয়ে দৌড়ে বাইরে এসে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনকে খবর দেন।হামলাকারী লিমনের হাতে, মাথায় ও পায়ে জখম রয়েছে। আর তাসমিন নাহারের পেটে এবং ঊরুতে আঘাত রয়েছে।

 

  • জখম
  • বিচারক. ছেলে. হত্যা
  • স্ত্রী
  • #