ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে আজ রোববার তার চিকিৎসাসংক্রান্ত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাদিকে বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’ রয়েছে বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে।
চিকিৎসকরা জানান, হাদিকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে দুটি বিষয়ের ওপর। এক, বিদেশি কোনো হাসপাতাল তার কেস গ্রহণ করে কি না। দুই, রোগীকে নিরাপদে বিদেশে নেওয়ার মতো শারীরিকভাবে স্থিতিশীল (স্টেবল) অবস্থা তৈরি হয় কী না। এই দুটি বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বোর্ডের সদস্য ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের রেসিডেন্ট চিকিৎসক ডা. মো. আব্দুল আহাদ বলেন, গতকালের মতো আজও বোর্ডের সব সদস্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। রোগীর কেস সামারি প্রস্তুত করে ইতিমধ্যে বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। থাইল্যান্ডের ব্যাংকক অথবা সিঙ্গাপুরের কোনো হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনো কোন দেশ চূড়ান্ত হয়নি।
চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাদির শারীরিক অবস্থায় এখনো কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়নি। পরিস্থিতি আগের মতোই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে।
সর্বশেষ রিপিট সিটি স্ক্যানে তার মস্তিষ্কের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ পাওয়া গেছে বলে জানান চিকিৎসকেরা। ব্রেনে ব্যাপক ইডেমা (পানি জমা) রয়েছে, যার ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি মস্তিষ্কের কিছু অংশে ছিটেফোঁটা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণও পাওয়া গেছে। ক্লিনিক্যাল পর্যবেক্ষণেও অবস্থার কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি।
চিকিৎসকদের মতে, ব্রেইন স্টেমের ইনজুরি এখনো গুরুতর পর্যায়ে রয়েছে। ফুসফুসের অবস্থায় তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি এখনো লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন এবং যন্ত্রের সহায়তায় শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। তবে কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে মাথায় গুলি করা হয় ওসমান হাদিকে। চলন্ত রিকশায় থাকা তাকে মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা গুলি করে পালিয়ে যায়। হাদি এখন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।