সরকার ৬৫ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে সাইপ্রাসভিত্তিক মিড গালফ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট এবং কানাডার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার রয়েছে। এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) থেকে ফসফেট ক্রয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়। বিসিআইসি’র অধীন টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড টিএসপি সার উৎপাদনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান। টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক এসিড ও ফসফেট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সর্বমোট ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফসফেট প্রয়োজন হবে।
টিএসপি সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফসফেট আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুটি দরপত্র পাওয়া যায়। কারিগরি উপ-কমিটি কর্তৃক পাওয়া দরপত্র কারিগরি মূল্যায়ন সম্পাদন করে। কারিগরি মূল্যায়নে দুটি দরপত্র গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, একটি কমিটির মাধ্যমে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফসফেটের দাফতরিক প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি মেট্রিক টন ৩৪৩ দশমিক ৪৮৬ মার্কিন ডলার। দুটি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাইপ্রাসভিত্তিক মেসার্স মিডগালফ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সর্বনিম্ন দর উল্লেখ করে।
বর্তমান টেন্ডারে প্রায় সর্বনিম্ন দর প্রতি মেট্রিক টন ২৭৪ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। যা সর্বশেষ ক্রয় দর ৩৪২ দশমিক ৬৯ মার্কিন ডলার থেকে প্রতি মেট্রিক টনে ২০ শতাংশ কম। সে হিসেবে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফসফেট ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৬৮ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
উপদেষ্টা কমিটির সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফসল উৎপাদনে মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। দেশের কৃষি উৎপাদনে এমওপি সারের চাহিদা মেটাতে বিএডিসির মাধ্যমে কানাডার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির আওতায় ২০১৪-১৫ অর্থ বছর থেকে এমওপি সার আমদানি করা হচ্ছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নিরাপত্তা মজুতসহ বাংলাদেশে এমওপি সারের চাহিদা প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বিএডিসি চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ৭ লাখ মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানি করবে। চাহিদার অবশিষ্ট এমওপি সার বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি করা হয়।
বিএডিসি কর্তৃক কানাডা থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানির বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন রয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সারের দাম ২৮২ দশমিক ৬২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।