সাভারের আশুলিয়ায় পোশাক কারখানাগুলোতে আবারও শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিরাজ করছে অস্থিরতা। বাধ্য হয়ে অর্ধশতাধিক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। রোববার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও দুপুরের পর টঙ্গী আশুলিয়া মহাসড়কের দু’পাশের সব কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ সময় কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি পালন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মৃদু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন আশুলিয়ার জিরাবো, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, সরকার মার্কেট, জামগড়াসহ বেশকিছু এলাকায় ঘুরে অর্ধশতাধিক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার খবর পাওয়া যায়।
পুলিশ, শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, নরসিংহপুর এলাকায় ডেকো গ্রুপের প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক সকালে কাজে যোগ দিয়ে বিভিন্ন দাবিতে কারখানার ভেতর কর্মবিরতি পালন করেন। এর পর দুপুরে খাবার বিরতিতে তারা কারখানা থেকে বেড়িয়ে পার্শ্ববর্তী হা-মীম গ্রুপ, শারমিন গ্রুপ, মেডলার গ্রুপ ও অনন্ত গ্রুপের পোশাক কারখানায় হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কারখানাগুলোর গেট ভাঙার চেষ্টা করে। এ সময় তারা হ্যান্ডমাইকে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে বেড়িয়ে আসার আহ্বান জানান। এ সময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাধ্য হয়ে হা-মীম গ্রুপের সব পোশাক কারখানাসহ শারমিন গ্রুপ, মেডলার গ্রুপ ডেকো গ্রুপ ও বড় বড় দুটি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে ওই এলাকার নিউএইজ, নাসা, আল মুসলিম, জেনারেশন নেক্সটসহ অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অর্ধশতাধিক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষবাগ এলাকার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা জানান, টানা ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। কিন্তু কারখানার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের কোনো দাবিই মেনে নিচ্ছে না। হঠাৎ রোববার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে তারা দেখেন কারখানা বন্ধের নোটিশ। মালিকপক্ষ দাবি না মেনে তালবাহানা করছেন। পরে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ শুরু করে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, সকালে কয়েকটি পোশাক কারখানার গেটে ছুটির নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কয়েকটি পোশাক কারখানায় সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। পরে পর্যায়ক্রমে কারখানা ভাঙচুরের হাত থেকে রক্ষার জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ । তবে বিকেলে মিটিং আছে, সেখানে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান হতে পারে।