শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হলেন বামপন্থি অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। রোববার রাত আটটার দিকে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানায়, গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বামপন্থি অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বীবিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয় গতকাল। আজ প্রথম দফা ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, একজন প্রার্থীও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। এরপর দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনা করে রাতে নির্বাচন কমিশন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের নেতা অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকেকে বিজয়ী ঘোষণা করে।
অনূঢ়া কুমারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কায় রাজাপক্ষে পরিবারের টানা দেড় দশকের বেশি সময়ের একক আধিপত্যের অবসান ঘটল। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পর থেকে শ্রীলঙ্কা শাসন করেছে দুটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল বা তাদের জোট বা তাদেরই কোনো অংশ। এর মধ্যে একটি রাজাপক্ষে পরিবারের নেতৃত্বাধীন দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)। দলটি থেকে একাধিকবার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশত্যাগের আগে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাঁর ছোট ভাই গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা আসার পর এনপিপি জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামীকাল সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। প্রেসিডেন্ট সচিবালয়ে তাঁর শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানটি হবে অনাড়ম্বর।
খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ নিত্যপণ্যের তীব্র সংকটের প্রতিবাদে ২০২২ সালে সড়কে নামেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। প্রবল জন–অসন্তোষের মুখে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ হাজারো মানুষ ঢুকে পড়েন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বাসভবনে। গোতাবায়া দেশ ছেড়ে পালান। এরপর রণিল বিক্রমাসিংহকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে দেশটির সংসদ।