গাজীপুরের শ্রীপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে পরিষদে আসতে বাধা দেওয়ার জেরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। গতকাল রবিবার দুপুরে বারতোপা বাজারে মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোক্তারুল করিম শামীম মোড়লের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সেনাবাহিনী ও এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন পরিষদে আসেন। সেখানে তিনি দাপ্তরিক কাজ করছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাওনা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোক্তারুল করিম শামীম মোড়ল ২০-৩০ জন কর্মী-সমর্থক নিয়ে পরিষদে ঢুকে হামলা চালান। জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবাদ করলে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর ও চালকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়।
পরে শামীম মোড়লের লোকজন পরিষদের দরজা-জানালা-আসবাব ভেঙে তছনছ করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। পরে শামীম মোড়লের লোকজন সরে যায়।
এদিকে দুপুরে শামীম মোড়লের ছেলে রিফাত মোড়ল লোকজন নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জাহাঙ্গীর আলম খোকনের ছেলে মিজানুর রহমান রায়হান বলেন, দুপুরে রিফাত মোড়ল তার লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করতে আসলে আশপাশের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় আমাদের কর্মীদের ৪টি হোন্ডা পুড়িয়ে দেয় রিফাত মোড়ল। তিনি দাবি করেন, রিফাত মোড়ল তাদের বাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন দুই পক্ষই। বিএনপি নেতা শামীম মোড়লের পরিবারের দাবি, পরিষদের পাশে বারোতাপা বাজারে চা খাওয়ার সময় চেয়ারম্যানের লোকজন শামীম মোড়লের ওপর আচমকা হামলা চালায়। এ সময় তার কর্মীরা এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করা হয়। এতে তার ১৫ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। শামীম মোড়ল নিজেও আহত হয়ে গাজীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন বলেন, কয়েকদিন ধরেই বিএনপি নেতা মোক্তারুল করিম শামীমের নেতৃত্বে বিএনপির লোকজন প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে জড়ো হচ্ছিল। পরিষদে না আসতে তারা আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে আসছিল। তাদের হুমকির কারণে আমি নিয়মিত পরিষদে কাজ করতে পারছিলাম না। মানুষের সেবা আটকে থাকায় আজ সকালে পরিষদে গেলে শামীম মোড়ল ও তার লোকজন হামলা চালায়। আমার গাড়ি, পরিষদের বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করেছে।