পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তি স্থাপনে জাতীয় কনভেনশনের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। গত সোমবার দলটির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিএনপি। বৈঠকে হাসিনা সরকারের আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করার আহ্বান জানানো হয়। বিএনপির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, প্রহসনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে পতিত সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রেখে অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করার সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসেবে সংঘাতের সৃষ্টি করা হচ্ছে। পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তি স্থাপনের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল, পার্বত্য জেলায় সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের একটি জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা জরুরি। সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
বৈঠকে বলা হয়, পতিত ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও ‘মবলিঞ্চিং’-এর মতো ঘটনা ঘটিয়ে শিল্পাঞ্চল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করেন, এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগে সব গণমাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন। বিএনপি এসব সমাজবিরোধী এবং ঐক্যবিনাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসারও দাবি জানায়।
এছাড়া সভায় ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’ বলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বক্তব্য নিয়ে তীব্র নিন্দা জানানো হয়। বিএনপির হাইকমান্ড দুই দেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অন্তরায় হিসেবে কাজ করার বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতৃবৃন্দকে এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই ধরনের মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা এবং বিরত থাকার আহ্বান জানানোর কারণে বৈঠকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।