গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মসজিদের মাইকের ব্যাটারি চুরির অভিযোগ তুলে মারধর ও শরীরে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনে তরুণ মো. ইসরাফিল মিয়ার (২৪) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইসরাফিলের বাবা মো. নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান লিটনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন কামরুল হাসানের সহযোগী বাবুল মণ্ডল (৪৫), শফিকুল ইসলাম (৩২), মো. জলিল (৬৫), মো. ইউসুফ (৪০), মো. সোহাগ (৪০) ও মো. ছাত্তার (৫৫)। আসামি সবাই গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট মেডিকেল মোড়ের বাসিন্দা। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর মারধরের ঘটনার দিন শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেটি গতকাল রাতে মামলা হিসেবে নিয়েছে পুলিশ। ইসরাফিল মিয়া শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী এলাকার বাসিন্দা নাছির উদ্দিনের ছেলে।
মামলার এজাহার ও স্বজন সূত্রে জানা যায়, ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে মো. নাছির উদ্দিনের ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান কামরুল হাসানসহ কয়েকজন। এরপর পাশের একটি স্কুলের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে কামরুল ও উপস্থিত অন্য লোকজন স্থানীয় একটি মসজিদের মাইকের ব্যাটারি চুরির সঙ্গে জড়িত হিসেবে ইসরাফিলকে অভিযুক্ত করেন। ইসরাফিল বারবার চুরি না করার কথা জানালেও তাঁর ওপর নির্যাতন চালাতে থাকেন কামরুল। স্থানীয় বাবুল মণ্ডল, শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন ইসরাফিলকে মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইসরাফিল। পরে কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ইসরাফিলের শরীরে গরম পানি ঢেলে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর পরিবারের লোকজন চিৎকার শুরু করলে ইসরাফিলকে স্কুলের মাঠে ফেলে রাখা হয়। ইসরাফিলকে মারধর করা হয়নি মর্মে একটি সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে নাছির উদ্দিনের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে ইসরাফিলকে তাঁর বাবা নাছিরের জিম্মায় দিয়ে সবাই চলে যান। প্রথমে ইসরাফিলকে শ্রীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে পুলিশ।