মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এক যুবককে ‘ছিনিয়ে’ নিতে চট্টগ্রামের পটিয়া থানায় হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে পটিয়া থানায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় এক সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে থানায় বিচারপ্রার্থীদের অপেক্ষার জন্য নির্মিত ঘরটি ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে রবিবার পটিয়া থানায় মামলা করেন পটিয়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. কামরুল ইসলাম। এরপর পটিয়া থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের একটি যৌথ দল চট্টগ্রাম মহানগরের বন্দর থানার উত্তর মাদারবাড়ি এলাকা থেকে ওই যুবককে গ্রেফতার করে। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে তাকে পটিয়া থানায় নেওয়া হয়। তাকে থানায় আনার খবর পেয়ে স্থানীয় আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা থানা ঘেরাও করেন। তারা আসামিকে ছিনিয়ে নিতে চান। এতে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় থানা প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের অপেক্ষার জন্য নির্মিত গোলঘরটি ভাঙচুর করেন তারা।
খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা থানায় আসেন। তখন থানার সামনের সড়ক দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি যাচ্ছিল। ওই গাড়িতে সিভিল ড্রেসে এক ব্যক্তি ছিলেন। স্থানীয় জনতা তাকে গ্রেফতার যুবক মনে করে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে সেনাবাহিনীর গাড়িটি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়।
পটিয়া সার্কেলের এসপি আরিফুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের কারণে উত্তেজিত জনতা থানার সামনে জড়ো হয়েছিল। কিন্তু আমরা সকালেই ওই আসামিকে গ্রেফতার করেছি। তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। জনতা আইনগত বিষয় না বুঝেই উত্তেজিত হয়ে উঠেছিল। আসামিকে ছিনিয়ে নিতে ভাঙচুর চালিয়েছিল। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, বিকালে এক সেনাসদস্য এসেছিলেন। তার হাতে আঘাত ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি চলে গেছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ধর্মীয় কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করার কথা স্বীকার করেছেন ওই যুবক। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য তাকে রিমান্ডে আনার আবেদন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।