জামালপুরে নাশকতা মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৩৭ জন নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। জেলার সাতটি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করে পুলিশ। বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এছাড়াও সরিষাবাড়ীতে সাবেক পৌর মেয়রসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৪৫ জন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় ২ জন, বকশীগঞ্জে ৭ জন, দেওয়ানগঞ্জে ৭ জন, ইসলামপুরে ২ জন, মেলান্দহে ৩ জন, মাদারগঞ্জে ১২ জন ও সরিষাবাড়ীতে ৪ জন। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলবে।
জামালপুর সদর উপজেলা থেকে গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তিরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের চাচাতো ভাই শহরের মিয়াপাড়া এলাকার মির্জা আব্দুল বাছেত (৫৫) ও ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জোগীরঘোপা এলাকার মনছুর আলী খান (৫৩)।
মেলান্দহ উপজেলা থেকে গ্রেফতার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হলেন চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চরপলিশা গ্রামের লোকমান আকন্দের ছেলে তারা আকন্দ (৬৫), নয়ানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পশ্চিম মালঞ্চ গ্রামের হেলালের ছেলে সরোয়ার জাহান বাবু (৩৬) ও উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বজরদ্দিপাড়ার আব্দুল বারেকের ছেলে ফজলে রাব্বী (২৬)।
বকশীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন, সদস্য আবু তালেব তোতা, সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, আলতাফ হোসেন, নুর আমিন, দেলোয়ার হোসেনসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ইসলামপুরে গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি উপজেলার কিসামতজাল্লা গ্রামের মৃত ওয়াহাব চৌধূরীর ছেলে রাকিব চৌধুরী (৩৭), যুবলীগ কর্মী কিংজাল্লা গ্রামের শাহানশাহের ছেলে রাজিব হোসেন (৪৫)।
মাদারগঞ্জে গ্রেফতারকৃত ১২ জনের মধ্যে পলিশা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও আদারভিটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সামিউল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, গুনারীতলা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বাছেদ, চরপাকেরদহ ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন। এ ছাড়াও মাদারগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শাহাদাত হোসেন রিপন, ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুনিম সাকিব, আদারভিটা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস সওদাগর, যুবলীগ নেতা শাহা আলম, সুজন রানা রঞ্জু, আওয়ামী লীগ নেতা ছামিউল ইসলাম মানিক এবং পৌর তাঁতী লীগের ১নং ওয়ার্ড সভাপতি আল আমীন।
এদিকে সরিষাবাড়ীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৪৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার মধ্যরাতে সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ মধ্যপাড়া এলাকার মৃত জয়েন শেখের ছেলে অলিল মিয়া (৪৫) বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে সাবেক পৌর মেয়র মনির উদ্দিনকে (৬২) প্রধান আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় ৪৫ জন নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত আরও একশ থেকে দেড়শ জনকে আসামী করা হয়েছে। এই মামলায় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তরিকুল ইসলাম নিটুল (৫৪), স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন (৬০), পোগলদিঘা ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারিক (৬০), আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল হোসেন (৪৮)।
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার জানান, গত ৫ আগষ্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের অভিযানে এসব মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৩৭ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কোর্ট আবুল হোসেন জানান, আদালত সকল আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।