পিতা

: ভীষ্মদেব বাড়ৈ
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

তুমি উঠতে উঠতে পাহাড়ের শীর্ষে উঠেছ পিতা;

আমাদের দিব্যদৃষ্টিকে তুমি ছাড়িয়ে যেতে যেতে

তুমি এক অনন্য উচ্চতায়;

তোমার তুলনা,

তোমার পরিধির বিশালতা,

তোমার হিমালয়ের অধিক উচ্চতা-

এ শুধু তোমার তুলনা তুমি।

 

হে পিতা-

কী নেই তোমাতে?

কী নেই তোমার রত্ন করোটিতে?

কী নেই তোমার আত্ম-সিংহাসনে?

কী নেই তোমার অস্থিমজ্জায়?

 

হে জনক-

তুমি বহতা পলিমাটি

ভরিয়েছো অবিরাম শস্যদানায়

তুমি নদীর স্বাধীনতায়,

প্লাবনের পুষ্প হয়ে দুখীর উৎরোল সন্ধ্যা ভরিয়ে দিয়েছ

তোমার নিজস্ব ভৈরবে-

যেখানে দুঃখ নেই, যেখানে দুখী নেই

যেখানে উঁচু নেই নিচু নেই ভেদ নেই, ভেদাভেদ নেই;

আছে শুধু তোমার বিন্যস্ত মহাকাব্য-

‘ভায়েরা আমার, বোনেরা আমার।’

 

তোমার মধ্যে কতটা নদী ছিল

কতটা আকাশ ছিল,

কতটা সাগর ছিল,

কতটা পাহাড় ছিল,

আজ অব্দি, কেউ জানে না পিতা!

মহাসমুদ্রের পরিধি কে কবে ফিতায় মেপেছে?

কে কবে চোখে দেখে মহাশূন্য গতি?

তুমি হিমালয়, তুমি হিমালয়, তুমি হিমালয় নদী!

 

হে জন্মদাতা-

কী করে এক লহমায় একটি স্বাধীন পতাকা দিলে?

কী করে একটি আপসহীন রাষ্ট্রের জন্ম দিলে?

কী করে পতাকার দ্রোহের মিছিলে

একটি ভাষণ একটি সমুদ্র হল?

কী করে- ধন্বন্তরী বিশ্বকর্মার মতো একটি ওলট-পালট দিব্য ভাষণে,

একটি অমোঘ রাত্রিকে ঝকঝকে দিন করে দিলে?

‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

 

আমি জানি জনক,

এ শাশ্বত পঙ্ক্তিমালা-

জাতির জীবনে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ।

আমি জানি,

তোমার বিনির্মিত তোমার জীবনের ‘শ্রেষ্ঠ পতাকা’

একান্ত আপন করে তোমার জাতির কাছে রেখে গেলে পিতা।

তুমি নিঃশব্দে অনির্বাণের পথে চলে গেলে;

তুমি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়ে

শুধু নিঃশব্দে একাকী চলে গেলে পিতা!

তুমি নিঃশব্দে চলে গেলে!

#