রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান বিচারপতির বাসভবন পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এজন্য বুধবার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালককে বাসভবনটি সরেজমিন পরিদর্শন করে সচিত্র প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে ১৯ হেয়ার রোডস্থ প্রধান বিচারপতির বাসভবনকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ঐতিহাসিক এ স্থাপনার সুরক্ষা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেবিষয়ে প্রধান বিচারপতি গুরুত্বারোপ করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে এ নিয়ে বিশেষ সভা হয়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলমসহ ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরাকীর্তি আইন ১৯৬৮ এর বিধান অনুযায়ী বাসভবনটির মালিকানা সুপ্রিম কোর্টের কাছে রেখে এটি সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এটি সংরক্ষণ করা গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ স্থাপনার সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ নিয়ে বৈঠকের পর ঐতিহাসিক এ স্থাপনার গুরুত্ব বিবেচনায় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ অগাস্ট ১৯০৮ সালে নির্মিত এ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ঐতিহাসিক এ স্থাপনা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার প্রেক্ষিতে নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত হলে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য যেসব আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়, সেগুলোর মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবন অন্যতম।
সুপ্রিমকোর্টের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯০৮ সালে নির্মিত অনন্য এ স্থাপনার নির্মাণশৈলীতে মোঘল ও ইউরোপীয় ধ্রুপদি স্থাপত্যরীতির মিশ্রণ পরিলক্ষিত হয়। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়ে যাওয়ার পর এ ভবন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হলেও ১৯৫০ এর দশকের শুরু থেকে ভবনটি প্রধান বিচারপতির বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।