রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে ডেকে নিয়ে মারধরের পর বিবস্ত্র করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে পাঁচ নারীসহ প্রতারক চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির (২৮), আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান (২৬), রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা (৩৫), সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার(৩২), জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম (২০), লিজা (২৫) ও শাহানাজ আক্তার (২০)।
পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেজে বা প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার মতো বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে প্রলুদ্ধ করে। তাদের এসব লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে কেউ ফাঁদে পা দিলে তাকে জিম্মি করে অর্থ ও মূল্যবান দ্রব্যাদি হাতিয়ে নেয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ৪ অক্টোবর ঢাকার নবাবগঞ্জের মো. নাসির উদ্দীন ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে ৬ অক্টোবর দুপুরে সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার নামের একজনের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে। ওইদিন সন্ধ্যায় সীমার কথা মতো বাদী খিলগাঁও থানার টেম্পুস্ট্যান্ডের ১৩৬ দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসায় যায়।
কিছুক্ষণ পর সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার ও আনোয়ার ওরফে তন্ময়সহ আরও কয়েকজন ওই বাসায় আসে। মামলার বাদী নাসির উদ্দীন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে বিবস্ত্র করে মারধর শুরু করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে এবং ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার নিজেকে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে বাদীর মায়ের কাছ থেকে মোবাইলের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাদীর মা তৎক্ষণাৎ তাদের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে পাঁচ হাজার টাকা প্রেরণ করে। এরপর তারা ভিকটিমের নিকট থাকা দুটি স্বর্ণের আংটি, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও নগদ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেয়। পরবর্তী সময়ে রাত সাড়ে এগারটার দিকে আনোয়ার ওরফে তন্ময় ভিকটিমের চোখ বেঁধে মোটরসাইকেলে করে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপরে ফেলে যায়।
এ ঘটনায় ভিকটিম ৯ অক্টোবর খিলগাঁও থানায় মামলা রুজুর পর ভিকটিমের দেখানো মতে ওইদিন খিলগাঁও এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির, আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান, রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা, সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার, জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম ও লিজা নামের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।