এমপিওভুক্তির দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা। বুধবার সকাল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সামনে তারা অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন।দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাননি। এমনকি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শিক্ষক প্রতিনিধিদলকে এক প্রকার অবজ্ঞা করেছেন অভিযোগ তাদের।
আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দরা বলেন, শিক্ষাসচিব আশানুরূপ কিছুই বলেননি। আমরা হতাশ। আমরা মনে করেছিলাম, এমপিওভুক্তির বিষয়ে করণীয় নিয়ে একটি কমিটি করে দেবে মন্ত্রণালয়। কিন্তু শিক্ষা সচিব যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে শিক্ষকদের এক প্রকার অবজ্ঞা করা হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আমরা চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে লাগাতার অনশন ও ঢাকামুখী লংমার্চ করার হুঁশিয়ারি দেন। সন্ধ্যার পর মাউশির সামনের রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। একপর্যায়ে রাত ৮টার পরে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে জলকামামানসহ অন্যান্য সাজোয়া যান নিয়ে হাজির হয় বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মেহেরাব আলী বলেন, মঙ্গলবারের আশ্বাস মতো বুধবার তারা শিক্ষাসচিবসহ অন্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। কিন্তু তাদের দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি। শিক্ষা সচিব তাদের বলেছেন, এমপিওভুক্তির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিষয় যুক্ত। সবার সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তই জানানো যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দাবির বিষয়ে জানাতে চাই। দাবি আদায় না হলে লাগাতার অনশন, ঢাকামুখী লংমার্চসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সন্ধ্যার পর থেকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সারারাত এভাবে বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স ফেডারেশনের সভাপতি নেকবর হোসেন বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, দাবির বিষয়ে একটি কমিটি করে দেবে। কিন্তু শিক্ষাসচিব কার্যকর কোনো আশ্বাস তো দিলেনই না উল্টো কেমন অবজ্ঞার সুরে কথা বলেছেন। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতর আন্দোলন করে যাব।
সাক্ষাৎকালে শিক্ষক প্রতিনিধিদলে ছিলেন মো. মেহেরাব আলী, নেকবর হোসেন, হুমায়ন কবির সুমন, মাসুম বিল্লাহ ও মোস্তফা কামাল। অন্যদিকে শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জোবায়ের ও মাউসির ডিজি অধ্যাপক রেজাউল করিম ছিলেন।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এ এসব শিক্ষকদের জনবল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেনি বা কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি। ফলে সারা দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। শিক্ষকরা বিনা বেতনে ৩২ বছর ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
শাহবাগ থানার ওসি বলেন, যে কোনো ধরনের অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান করছে ঘটনাস্থলে।