ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে কঠোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এ বিবৃতি পোস্ট করা হয়েছে।
বিবৃতি বলা হয়- ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
‘যতবারই হত্যা করো
জন্মাবো আবার,
দারুন সূর্য হবো
লিখবো নতুন ইতিহাস।’
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইতিহাসের সন্তান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইতিহাসের স্রষ্টা। যুগে যুগে ছাত্রলীগ ছিল, আছে এবং থাকবে। জাতির যে কোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার ঐতিহাসিক ভূমিকার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বহস্তে গড়ে তোলা সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ,ছাত্র সমাজের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে ছাত্র সমাজের প্রিয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের পাশাপাশি ইতিহাসের নানা সন্ধিক্ষনে পরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রতিটা আন্দোলনে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছে। এইজন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন “ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস”। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে রক্ত দিয়ে যেমন বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষা করেছিল,তেমনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ১৭ হাজার নেতাকর্মী আত্মাহুতি দিয়েছেন।স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশেও গণমানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, জঙ্গিবাদ বিরোধী আন্দোলন, ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলন সহ বিভিন্ন জাতীয় দুর্যোগ দূর্বিপাক মোকাবেলা ও সামাজিক কর্মকান্ডে ছাত্রলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়- গত ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখ অবৈধ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অবৈধ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। মূলত ইউনুস-আসিফ নজরুল গং এদেশে জঙ্গিবাদ চাষাবাদ করে তাদের বিদেশি প্রভুদের ঘাঁটি গড়ার সুযোগ করে দিতে চায়। সরকারের ভেতরে থাকা জামাত শিবির ও নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তাহরীর নেতারা মনে করে বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রধান বাধা হলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তারা তাদের বাধা দুর করার হাস্যকর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা জনগণের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই এই সরকার যারা নিজেরাই অবৈধ এবং অসাংবিধানিক, তারা কিভাবে একটা রাজনৈতিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে? শুধু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত না, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই এই অবৈধ সরকারের যে কোন সিদ্ধান্তকেই আমরা প্রত্যাখ্যান করি। দেশের আপামর ছাত্র-জনতা বিশ্বাস করে বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রতিটি কর্মকাণ্ড অবৈধ। এই অবৈধ সরকারের কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাদেরকে প্রকারান্তরে স্বীকৃতি দেয়ার অভিপ্রায় আমাদের নেই,বরং তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এসব হাস্যকর,দুরভিসন্ধিমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে লাভ নেই; বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অচিরেই তার স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হবে।আপনাদের এই দুঃসাহস অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিনত হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সাবেক ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ হলেন ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন (সাবেক সভাপতি), এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), আব্দুর রহমান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), অসীম কুমার উকিল (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী (সাবেক সভাপতি ), ইকবালুর রহিম (সাবেক সাধারণ সম্পাদক ), এ কে এম এনামুল হক শামীম (সাবেক সভাপতি), বাহাদুর বেপারী (সাবেক সভাপতি), অজয় কর খোকন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), এ্যাডভোকেট লিয়াকত সিকদার (সাবেক সভাপতি), নজরুল ইসলাম বাবু (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), মারুফা আক্তার পপি (সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি), এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর (সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক), মাহমুদ হাসান রিপন (সাবেক সভাপতি ), মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ (সাবেক সভাপতি), সিদ্দিকী নাজমুল আলম (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), সাইফুর রহমান সোহাগ (সাবেক সভাপতি), এস এম জাকির হোসেন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন (সাবেক সভাপতি), গোলাম রাব্বানী (সাবেক সাধারণ সম্পাদক ), আল নাহিয়ান খান জয় (সাবেক সভাপতি) ও লেখক ভট্টাচার্য (সাবেক সাধারণ সম্পাদক)।