চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ২ মাস আগে

অবশেষে নানা অভিযোগে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। দখলকৃত সেই ভূমি ফেরত চাইছেন জমি মালিকরা। আর দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবি শিক্ষার্থীদের। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল সম্পর্কে তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি চাঁদপুরে যোগদানের পূর্বেই অধিগ্রহণ প্রস্তাব বাতিল করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। অভিযোগ উঠেছে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের আলোচিত সেলিম খান জোরপূর্বক অনেক পরিবারকে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করে। এছাড়া জমির বাজারদরের চাইতে কম দাম দেওয়া হয়েছে তাদের। এই বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল করে প্রশাসন। এমন সংবাদে আনন্দিত জমির মালিকরা।

ভুক্তভোগী এক জমির মালিক কালু খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় করার নাম করে আমার কাছ থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক নিয়ে গেছে সেলিম খান। আমি দিতে রাজি হইনি। তার লোকজন দিয়ে আমাকে ধরে এনে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জমি লিখে নেয়। দাম হয়েছে ৩৭ লাখ টাকা। দিয়েছে ১২ লাখ টাকা। আমি আমার জমি ফেরত চাই।

লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. কাজল ও হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বসত বাড়ি ছিল। সেলিম চেয়ারম্যান দীপু মনির প্রভাব খাটিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু এখনত আর বিশ্ববিদ্যালয় হলো না। আমাদের জমি আমরা ফেরত চাই।

তারা আরও বলেন, এলাকার বহু পরিবার নিজবাড়ি থেকে চলে যেতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য বহু বসতভিটা ও ফসলি জমি বালু দিয়ে ভরাট করেছে। ওইসব জমি এখনো পড়ে আছে।

এদিকে চাঁদপুর শহরের ওয়াপদা গেইট খলিশাডুলি এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।

স্থায়ী ক্যাম্পাস দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সিয়াম ও নিহাল বলেন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তার ভাইয়ের দুর্নীতির কারণে সরকার ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল করে দেয়। যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা করাসহ যাবতীয় কাজে জমি বরাদ্দ দেয়া হোক।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। আগে যে স্থানে ভূমি অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে তা বাতিল করা হয়েছে। ওই জায়গায় আর বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে না।

তিনি বলেন, নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে আমরা নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কাজ করবো।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৯ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা। সংসদে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিল পাস হয় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তিন বিভাগের দুই ব্যাচে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮০ জন।

  • চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • বাতিল
  • ভূমি অধিগ্রহণ
  • #