পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে সাঁথিয়া পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের সাঁথিয়া, বেড়াসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার খাইরুন নাহার খানমকে আহ্বায়ক ও সালাহউদ্দিন খানকে সদস্যসচিব করে সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির ২৪ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। কমিটিতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান ওরফে ভিপি শামসুর রহমানকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। কিন্তু সমর্থকরা আশা করেছেন, শামসুরকে আহ্বায়ক করা হবে। তাকে আহ্বায়ক না করায় ও তার পক্ষের নেতারা পদ না পাওয়ায় কমিটি ঘোষণার পর কমিটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে গতকাল শুক্রবার ঝাড়ুমিছিল করেন শামসুরের অনুসারীরা।
সেইসঙ্গে কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার বিকালে সাঁথিয়া পৌর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দেন শামসুরের সমর্থকরা। অন্যদিকে নতুন কমিটির আহ্বায়ক খাইরুন নাহার খানম ও সদস্যসচিব সালাহউদ্দিন খানের সমর্থকরা পাল্টা মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি নেন। বিকালে শামসুরের সমর্থকরা কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিল নিয়ে বোয়াইলমারি বাজারের কাছে পৌঁছালে সাঁথিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের দিক থেকে খাইরুন ও সালাউদ্দিন খানের নেতৃত্বে তাদের সমর্থকদের একটি মিছিল মুখোমুখি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে শাহীন মল্লিক (৪৫), মুন্না (৩৫), হেলাল উদ্দিন (২৭), ইব্রাহিম হোসেন (৪২), হাশেমসহ (৪০) উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শাহীন মল্লিককে পাবনা সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিদের সাঁথিয়া, বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নতুন কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান বলেন, ‘অনিয়ম ও ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যমে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বিপক্ষে উপজেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। কমিটি বাতিলের দাবিতে আজ নেতাকর্মীরা মিছিল করলে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে আমার ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
তবে নতুন কমিটির সদস্যসচিব সালাউদ্দিন খান বলেন, আমার নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করার সময় তাদের ওপর শামসুরের সমর্থকরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এতে আমার অন্তত ১০ জন কর্মী আহত হন।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে। এখনও কোনও পক্ষ থানায় মামলা করতে আসেনি।