জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষার্থীদের মারামারির ছবি ও ভিডিও করায় কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল রবিবার বিকেল পৌনে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ধূপখোলা মাঠে ইংরেজি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাঁরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে ফের সংষর্ষ বাধে। এই ঘটনা ভিডিও করতে গেলে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী জুনায়েতের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং তাঁর ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এর আগে গতকাল দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ত বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে গণিত বিভাগের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা আনন্দোল্লাস করতে থাকে। পরে গণিত বিভাগের আরো শিক্ষার্থী এসে ইংরেজি বিভাগের সঙ্গে সংঘাতে জড়ান। এ সময় পুরো ধূপখোলা মাঠে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় উভয় বিভাগের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
এদিকে এ ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কালের কণ্ঠের জবি প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখ মারামারির ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে গেলে প্রথমে বাধা দেন জবি শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত অজ্ঞাতপরিচয় আরো কয়েকজন জুনায়েতের পর হামলা করেন।
এ ব্যাপারে জুনায়েত শেখ বলেন, আমি ভাস্কর্য চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখতে পাই ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব দিকে মারামারি হচ্ছে। আমি ফোন দিয়ে ভিডিও করতে শুরু করি। এ সময় চার-পাঁচজন কেন আমি ভিডিও করছি জিজ্ঞেস করে। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিই। পরে তাঁরা বলেন, তুই কে? তুই কিসের সাংবাদিক! ভিডিও কেন করবি? বলে ফোন ছিনিয়ে নিতে যায়। বাধা দিলে তাঁদের কয়েকজন আমার বুকে আঘাত করে। পরে আমি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা সরে যায়। এ সময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সবাইকে সরে যেতে বলেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন বলেন, আমি সেখানে হামলা ঠেকিয়েছি। আমি হাত দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছিলাম। সেখানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সেক্রেটারি সুজন মোল্লা বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে বোঝার উপায় নেই কারা গায়ে হাত তুলেছে। আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। আমাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। করতেও চাই না।
জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। শুধু সাংবাদিক নয়, কোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হলেও আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। কে হামলা করেছে, তার পরিচয় শনাক্ত করা গেলে আমরা সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তীতে ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।