পর্যটকদের সেন্টমার্টিন যেতে লাগবে ট্রাভেল পাস

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ সপ্তাহ আগে

অবশেষে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের বার্তা দিল সরকার। তবে সেখানে চাইলেই যেকোনো পর্যটক যেতে পারবে না। তার জন্য লাগবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপসে তৈরি ট্রাভেল পাস। এদিকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। একই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে একটি গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা হলেন টেকনাফ এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অথবা ট্যুরিজম বোর্ড, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডের একজন করে প্রতিনিধি।

গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে কমিটি গঠন ও বিভিন্ন গাইডলাইন উল্লেখ করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে কমিটির কর্মপরিধি হিসেবে বলা হয়েছে, পর্যটক এবং অনুমোদিত জাহাজ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পরিবহন না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পর্যটকগণ কোন হোটেলে অবস্থান করবে তার রেজিস্টার সংরক্ষণ করতে হবে। জাহাজ ছাড়ার এন্ট্রি পয়েন্টে শুধু বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপস থেকে সংগ্রহকৃত ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হবে। জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে এবং সেন্টমার্টিনে এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করতে হবে।

অফিস আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষার জন্য সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সর্বশেষ ২০২০ সালের আগস্টে সেখানে পর্যটক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সরকারের তরফে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেসকে (সিইজিআইএস) একটি সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা শেষে জানায়, দ্বীপটিতে কোনোভাবেই পর্যটকদের রাতে থাকার অনুমতি দেওয়া ঠিক হবে না। শীতকালে পর্যটন মৌসুমে দিনে ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি পর্যটক যেতে দেওয়া ঠিক হবে না।

সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের ও অন্যান্য গবেষণায় বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে, এই দ্বীপ রক্ষায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। পর্যটন ব্যবসায়ীদের চাপ ও অন্যান্য কারণে সরকারের পিছু হটলে চলবে না।

এমন সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি ও কর্মীরা ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছে। এরইমধ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, সেন্টমার্টিনসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা দ্বীপটি বাঁচাতে চাই। এটি সবার সম্পদ। পর্যটকরা দায়িত্বশীল আচরণ করলে দেশের ওই সম্পদ রক্ষা পাবে।

  • ট্রাভেল পাস
  • পর্যটক
  • সেন্টমার্টিন
  • #