ভোলার বোরহানউদ্দিনে রাতের আঁধারে এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের চারটি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন আবু তছলিম নামের ওই শিক্ষকের পরিবার। মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকের দাবি জমিজমা বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত ২টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ধারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ২টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ধারিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবু তছলিমের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় কে বা কারা। রাতের আঁধারে দেয়া আগুনে আসবাবপত্রসহ পুড়ে ছাই হয়ে যায় ২টি বসত ঘর, একটি মুরগির খামার ও একটি কাঠের গুদাম। ভোর হওয়ার আগেই সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান তছলিমের পরিবার। হারান মাথা গোজার শেষ স্থানটুকুও। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই পুড়ে যায় ঘরগুলো।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, রাতের আঁধারে লাগানো আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভিটির উপর পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া ঘরের ধংসস্তূপ। আর এ ধংসস্তুপের মধ্যে দাঁড়িয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিলাপ করছেন গৃহকর্তা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবু তছলিম। সব হারিয়ে নিঃস্ব আবু তছলিমের সামনে চরম অনিশ্চয়তা।
ভুক্তভোগী আবু তছলিম জানান, রাসেল, সুমন ও শাহে আলমসহ প্রতিবেশী কয়েকজনের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে তার দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছে। বিভিন্ন আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই প্রতিপক্ষের অব্যাহত হুমকির কারণে তিনি নিজের বসতঘর ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যত্র আত্মগোপনে রয়েছেন। তার নিজের জীবনও হুমকির মুখে। ওই বিরোধের জেরে বুধবার আগুন দিয়ে তার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে আবু তছলিমের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার প্রতিপক্ষের মো. রাসেল। তিনি জানান, প্রতিবেশীদের ডেকে এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে তছলিমের কর্মকাণ্ডকে দুষলেন।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন টিনের ঘরগুলোতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। প্রায় দেড়ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে তার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে চরটি ঘর ও মালামালসহ অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।