হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া নিয়ে রংপুরের একটি সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার পথে কুড়িগ্রামে বাসে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দুপুরের দিনে এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেছেন।
তাদের অভিযোগ, সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য যেসব বাস রিজার্ভ করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে কয়েকটিকে আটকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর কতগুলো বাসে আটকে দেওয়ার পর যাত্রীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেগুলো যেতে দেয়।
তবে কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি নাজমুল আলম বাস আটকানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আমরা শহরের একাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে সব ধরনের যানবাহন চেক করছি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ‘হিন্দু ফাউন্ডেশন’-এ উন্নীত করাসহ আট দফা দাবিতে শুক্রবার রংপুরের মাহিগঞ্জ কলেজে বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ।
কুড়িগ্রাম জেলা সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রাজিব সরকার অপু বলেন, একটি বাস কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের কাউনিয়া পয়েন্টে বাসে একদল লোক হামলা চালায়। এতে ৩০ জন আহত হন। তাদের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামলায় আহত শিপুল কর্মকার বলেন, আমরা রাজারহাট থেকে বাস রির্জাভ নিয়ে রংপুরে যাচ্ছিলাম। এ সময় কাউনিয়া বাজারে আমাদের বাস আটকে একদল যুবক অর্তকিত হামলা করে।
এ ব্যাপারে জানতে রংপুরের কাউনিয়া থানার ওসি এস এম শরীফকে মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
কুড়িগ্রাম শহরের ত্রিমোহনী, ধরলা সেতু, ফুলবাড়ী সেতু, বড়বাড়ী বাজারসহ একাধিক জায়গা থেকে রংপুরগামী মেইল যাত্রীবাহী বাসগুলো যেতে দেওয়া হলেও, রির্জাভ করা বাসগুলো যেতে দেওয়া হয়নি। বাসগুলোকে ঘুরিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন।
দুপুরের দিকে জেলা শহরের ত্রিমোহনী বাজারে বাস আটক করলে যাত্রীরা নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাঁচটি বাস ছেড়ে দেয়।
কুড়িগ্রাম শহরের শিক্ষার্থী শিমুল দাস বলেন, আমাদের সনাতন জাগরণ মঞ্চের পাঁচটি বাস পুলিশ আটকে দেয়। এক ঘণ্টা আমরা বিক্ষোভ করলে পরে যেতে দেয়। আমাদের এভাবে হয়রানি কেন করছে? এটাই কি বৈষম্যবিরোধী চেতনা?
এর ঘণ্টাখানেক পরে ত্রিমোহনী মোড়ে আরো তিনটি রিজার্ভ করা বাস আসে। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয় বলে অভিযোগ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
উলিপুর উপজেলার যতীনের হাট গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার চন্দ বলেন, বেলা ১টার দিকে আমাদের তিনটি বাস আটকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা রংপুরের সমাবেশে যোগ দিতে পারছি না। আমাদের জোর করে বাস থেকে নামানো হয়েছে।
সনাতন জাগরণ মঞ্চের কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান সমন্বয়ক রাজিব সরকার অপু বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং বাস যেতে না দেওয়া দুঃখজনক। আমরা কাকে বিচার দেব?