সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ তিনি বলেন, আদালত প্রাঙ্গণ, রঙ্গম সিনেমা হল ও কোতয়ালি মোড়ে তিন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলাগুলো করা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর মধ্যে আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনায় মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০০-৭০০ জনকে, রঙ্গম সিনেমা হলের সামনের ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০০-৪০০ জনকে অজ্ঞাত এবং কোতয়ালি মোড়ের ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত আরও ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তারেক আজিজ বলেন, গ্রেপ্তার ২৮ জনের মধ্যে আট জন আইনজীবী খুনের সাথে সন্দিগ্ধ আসামি। তারা হত্যা মামলায়ও আসামি হবে।
তবে এসব মামলায় কাদেরকে আসামি করা হয়েছে এবং কাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি পুলিশ কর্মকর্তারা। আইনজীবী নিহতের ঘটনায় আলাদা মামলা হবে বলেও পুলিশ জানায়।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। বেলা সোয়া ১২টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত বিক্ষোভের পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। ঢিলে আদালত মসজিদ কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলার কাচ ভেঙে যায়, যেখানে আইনজীবীদের চেম্বার রয়েছে।
এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীর নিহতের ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেছিলেন, আদালত থেকে বাসায় ফেরার পথে সড়কে আইনজীবী সাইফুলের ওপর হামলা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ওই আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় আরও ২০ জন আইনজীবী আহত হয়েছেন।
সাইফুল হত্যার বর্ণনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে এখনো স্পষ্ট করা হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।