ভারতের আগরতলাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাত ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এসব বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, একটা সভ্য দেশ কখনো অন্য দেশের দূতাবাসে হামলা করতে পারে না। ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তারা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতো হবে। কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না। দিল্লির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে চোখে চোখ রেখে। আমরা গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়েছি দিল্লির দাদাদের দাদাগিরি করার জন্য না।
আমরা দেখেছি বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সনাতনীদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের ওপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা শুধু জগন্নাথ হলই নয় সারা বাংলাদেশের মানুষকেই জানাতে হবে। ভারত ইস্যুতে জগন্নাথ হলকে নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন কথা বলা হয়। আমরা নাকি ভারতের দালাল কিন্তু এই মিছিলে আজ জগন্নাথ হল থেকে সবচেয়ে বেশি লোক এসেছে। আমাদের একটাই পরিচয় আমরা বাংলাদেশি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ভারতকে বলতে চাই, এদেশে আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেই। সুতরাং তারা যেন আওয়ামী লীগের আমলের মতো করে এদেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে। আমরা বিট্রিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়েছি, পাকিস্তানের বৈষম্যনীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। দেশের প্রশ্নে আমরা আবারও লড়াইয়ে নামতে রাজি আছি। শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেব।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ভারত সরকারকে তাদের কার্যক্রমের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান। এ সময় বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ভারত বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা করে এক নগ্ন ইতিহাস রচনা করেছে। ভিয়েনা কনভেনশনের বিপরীতে গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। ভারত তাদের আচরণের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে তারা বিশ্বসভ্যতা এবং ভদ্রতাকে ধারণ করে না। ভারত সরকারকে তাদের এমন নির্লজ্জ আচরণের জন্য বাংলাদেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনায় ভারতকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বলেছে স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদ। সংগঠনটির মিডিয়া উপকমিটির সদস্য তামিম আহসানের পাঠানো এক বিবৃতিতে আহ্বান জানানো হয়।