পাসপোর্ট সেবা নিতে গিয়ে গত বছর দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। সেবা খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয় বিচারিক সেবা নিতে গিয়ে। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
‘সেবা খাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। দুর্নীতি বলতে ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষমতার অপব্যবহারকে বোঝানো হয়েছে।
পাসপোর্ট সেবা ও বিচারিক সেবার পর ভূমি, ব্যাংকিং, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সেবায় ক্রমানুসারে বেশি ঘুষ দিতে হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে দুর্নীতির শিকার হয়েছে দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ পরিবার (খানা) আর ২০২৩ সালে ঘুষের শিকার দেশের প্রায় ৫১ শতাংশ পরিবার (খানা)।
টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেবা নিতে গিয়ে ২০২৩ সালে খানাপ্রতি গড়ে ঘুষ দিতে হয়েছে ৫ হাজার ৬৮০ টাকা। বিচারিক সেবা নিতে গিয়ে খানাপ্রতি ঘুষ দিতে হয়েছে ৩০ হাজার ৯৭২ টাকা। এরপর ভূমির সেবায় ১১ হাজার ৭৭৬ টাকা, ব্যাংকিং সেবায় ৬ হাজার ৬৮১ টাকা, বিআরটিএ সেবায় ৬ হাজার ৬৫৪ টাকা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সেবায় ৫ হাজার ২২১ টাকা করে খানাপ্রতি ঘুষ দিতে হয়েছে।
২০২৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশের জিডিপির শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।
টিআইবির খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ (এপ্রিল) পর্যন্ত সেবা খাতে জাতীয় পর্যায়ে মোট ঘুষের ন্যূনতম প্রাক্কলিত পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানুষ দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করে না। প্রধান অতিথি করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।