এবার বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মিলনমেলা হচ্ছে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই মেলাসহ এলাকায় জনগণের সমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল-হরিপুরের ঐতিহ্যবাহী পাথরকালীতে দুই দেশের এই মিলনমেলা আগামী শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) হওয়ার কথা ছিল।
রাণীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার চাপাসার তাজিগাঁও সীমান্তের নিভৃত গ্রাম টেংরিয়ার গোবিন্দপুর কুলিক নদীর পাড়ে প্রতি বছর এ ঐতিহ্যবাহী পাথরকালীর মেলাটি হয়।
সেখানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের দুই পাশে দুই দেশের প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার নারী-পুরুষ উপস্থিতি হন। ওই স্থানে এবার বিশৃঙ্খলা, মারামারিসহ অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা রয়েছে মর্মে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী পাথরকালী মিলনমেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
ঘোষণায় বলা হয়, আগামী ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী পাথরকালী মিলনমেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে ওই দিন কাউকে সেখানে না যাওয়ার অনুরোধ করা হলো।
এ ছাড়াও দুই দেশের বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মেলা ও কাঁটাতারের নিকটবর্তী এলাকায় জনসমাগম না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রবিবার (১ ডিসেম্বর) রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি মারফত এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সেদিন ওই মেলায় কাউকে না যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, কয়েক যুগ ধরে হরিপুর-রাণীশংকৈল উপজেলার সীমান্তবর্তী কুলিক নদীর ধারে কালীপূজার আয়োজন করে আসছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুরুতে এখানে একটি বড় কষ্টিপাথর দিয়ে তৈরি করা কালীর মূর্তিতে পূজা উদযাপিত হতো। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সেই মূর্তিটি চুরি হয়ে যায়। এরপর পাথরের মূর্তির আদলে আরেকটি মূর্তি তৈরি করে প্রতিবছর কালীপূজার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে সেখানে বসে মেলা। পাথরে নির্মিত মূর্তির নামানুসারে মেলার নামকরণ হয় পাথর কালীর মেলা।