ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থপাচার ৯০ শতাংশ রোধ হয়েছে: গভর্নর

: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থপাচার ৯০ শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

সোমবার (১১ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘স্মার্ট ইনভেস্টিগেশন মডেল ফর সিআইডি অফিসারস’ শীর্ষক এ প্রশিক্ষণ হয়।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ওভার ইনভয়েসিং শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব নয়, ৯০ শতাংশ বন্ধ করতে পারলেই আমরা খুশি। এখন আমরা বলতে পারি, ওভার ইনভয়েসিং ৯০ শতাংশ বন্ধ হয়েছে। এখন ব্যাংক অত সহজে এলসি করে না। এলসি করার আগে প্রাইসটা চেক করে, আমরা কতগুলো মেকানিজম করে দিয়েছি।’

পণ্য আমদানিতে ‘ওভার ইনভয়েসিং’ মানে হলো অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংক চ্যানেলেই বিদেশে পাচার হচ্ছে। পণ্যের মূল্যের নামে পাঠানো অতিরিক্ত অর্থ পরে বিদেশে আমদানিকারকের পক্ষে কেউ গ্রহণ করছে।

 

গভর্নর বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি বাড়ছে, পকেটে করে যে ডলার পাচার হয়, সেটা মোট পাচারের খুবই ক্ষুদ্র অংশ। মূলত পাচার হয় ট্রেড বেইজড মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে। ওভার ইনভয়েসিং বা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে টাকাগুলো পাচার হয়ে যায়। ধরেন একটা পণ্যের দাম ১০০ ডলার, সেটার জন্য কেউ দেড়শ ডলারের এলসি করলো। বাকি ৫০ ডলার পাচার হয়ে গেলো। আবার যারা রপ্তানিকারক, তারাও রপ্তানির টাকা দেশে না নিয়ে এসে সেখানে রেখে দেন, এটাও মানি লন্ডারিং।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমদানি নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা ব্যাংকগুলোকে বলে দিয়েছি, এলসি খোলার আগে দেখে নিতে যে জিনিসটা আনা হচ্ছে তার দাম ঠিক আছে কি না। আগে কোনোদিন ব্যাংকের শাখা পর্যায়ে তারা এই দামের বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতো না, ক্রসচেকও করতো না। গত দুই বছরে আমরা এই কালচারে চেঞ্জ আনতে পেরেছি যে এলসি করার আগে এ বিষয়গুলো দেখতে হবে।’

সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

সিআইডি প্রধান বলেন, ‘আগে শুধু মাদক ব্যবহারকারী ও পাচারকারীদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন মাদকের গডফাদারদের গ্রেফতার করার ধারা চালু করেছে সিআইডি। তাদের সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্টীয় কোষাগারে জমা করা হচ্ছে।’

এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া রচিত ‘মানিলন্ডারিং ও প্রেডিকেট অফেন্স: মামলা অনুসন্ধান ও তদন্ত কৌশল’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।

কর্মশালায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস এবং সিআইডির প্রশিক্ষণ উপদেষ্টা মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ খান সরফরাজ আলী প্রশিক্ষণ দেন।

কর্মশালা শেষে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের ডিআইজি কুসুম দেওয়ান (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।

#