বাংলাদেশে রেল প্রকল্পের তহবিল স্থগিত ভারতের

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ঘন্টা আগে

ভারত বাংলাদেশে রেলসংযোগ উদ্যোগের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি রুপির তহবিল এবং অন্যান্য নির্মাণ-সম্পর্কিত কাজ স্থগিত করেছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং শ্রম সুরক্ষার কথা উল্লেখ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  রোববার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে দ্য হিন্দু।

সূত্র জানিয়েছে, কমপক্ষে তিনটি চলমান প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া এবং আরও পাঁচটির জরিপ কাজ স্থগিত করার এই সিদ্ধান্তের ফলে মূলত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা ব্যাহত হবে।

নয়াদিল্লি এই অর্থ দিয়ে উত্তর ভারতের রেলপথ অবকাঠামোকে উন্নত করছে। এছাড়া বাংলাদেশকে এড়িয়ে নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করার ব্যাপারে ভাবছে দেশটি। একটি সূত্র জানিয়েছে, নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ প্রকল্পের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে।

প্রতিবেদন বলছে, নয়াদিল্লি এখন উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো শক্তিশালী করার জন্য এবং ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগ অনুসন্ধানের জন্য চিন্তা করছে, আঞ্চলিক বাণিজ্য গতিশীলতা পুনর্নির্মাণ করতে চেষ্টা করছে তারা। সূত্র জানিয়েছে, ভুটান ও নেপালের মধ্য দিয়ে ৩৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে সংযুক্ত করার জন্য স্থগিত প্রকল্পগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এগুলো সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডোর বা (চিকেন নেক করিডর)–এর ওপর নির্ভরতা কমাতে করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলটির মূল ভূখণ্ড ভারতের সাথে সংযুক্ত করা যায়।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা বর্তমানে বাংলাদেশকে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্যান্য জিনিসপত্র সরবরাহ করছি না। সংযোগ রুটের জন্য প্রকল্পের তহবিল বন্ধ। প্রথমত, কিছুটা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকা দরকার। তবে, ভারতের দিকে নির্মাণ কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।

২০২৪ সালে বাংলাদেশের সাথে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কের মূল্য ছিল ১২.৯ বিলিয়ন ডলার, যা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।

দ্য হিন্দু লিখেছে, ভারতের সহায়তায় বর্তমানে স্থগিত হওয়া তিনটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আখাউড়া- আগরতলা ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ এবং খুলাবুড়া-শাহাবাজপুর রেল লাইন স্থাপন; খুলনা-মোংলা বন্দর রেল লাইন এবং ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর রেল সম্প্রসারণ প্রকল্প। আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, আরও পাঁচটি ক্ষেত্রে অবস্থান জরিপ করা হয়েছিল, যা স্থগিত করা হয়েছে।

ভারত এখন অভ্যন্তরীণ এবং বিকল্প আঞ্চলিক কৌশলের দিকে ঝুঁকছে বলে জানা গেছে। সরকার ক্ষমতা এবং নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে লাইন দ্বিগুণ এবং চারগুণ করার সম্ভাবনা নিয়ে ভাবছে। একই সাথে নয়াদিল্লি ভুটান এবং নেপালের মধ্য দিয়ে রেল যোগাযোগের পথ খুঁজছে।

#