আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি বজায় রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি আইএমএফের হাতে নয়, বরং বাংলাদেশের হাতে। আমরা সিদ্ধান্ত নেব আমাদের মতো। এতে আইএমএফ কিস্তি দিলে দেবে, না দিলে নিজেদের মতো করে বাজেট করব।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজই প্রথম অফিস করেন। ওই বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ যোগ দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে ২১ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৬ এপ্রিল শেষ হয় এ বৈঠক। বসন্তকালীন বৈঠকের ফাঁকে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সাইডলাইনে আলাদা বৈঠক হয়।
তার আগে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির পর্যালোচনা করতে আইএমএফের একটি মিশন দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকা ঘুরে গেছে। কিন্তু ঢাকা বা ওয়াশিংটন—কোথাও আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচি থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ পাওয়া নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা পাওয়া যায়নি।
অর্থ উপদেষ্টা আজ সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফের সব শর্ত মেনে আমরা ঋণ নিতে চাই না। কারণ, বাংলাদেশ এখন আর আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়।
বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার শর্ত রয়েছে আইএমএফের; এ কথা উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা বলেছে, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে। আমরা বলেছি, বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তা পুরোপুরি বাজারে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তখন বিনিময় হার পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যেতে পারে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফের ঋণের মানে হচ্ছে বাজেট সহায়তা। বাজেট সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে এখনো আলোচনা চলছে। তবে সংস্থাটি থেকে অর্থ না নিয়েই দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে।